হাসপাতালে জাবি ছাত্রের হাতে হাতকড়া কেন: হাই কোর্ট

সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-ভাংচুরের ঘটনায় আটক এক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়া পরানোর ব্যাখ্যা দিতে আশুলিয়ার ওসিকে তলব করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2017, 06:47 AM
Updated : 29 May 2017, 12:12 PM

বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।

ওসি মহসিনুল কাদিরকে আগামী ৩১ মে হাই কোর্টে হাজির হয়ে তাকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নাজমুল হাসান রানা এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত শুক্রবার ভোরে সাভারের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় নিহত হন। এরপর পরপর দুই দিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তাদের সহপাঠীরা।

শনিবার বিকালে পুলিশের হস্তক্ষেপে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দিলেও পরে উপাচার্যের বাসভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ভাংচুর চালায়।

এরপর উপাচার্য সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন এবং শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। সিন্ডিকেটের সভা শেষে গভীর রাতে পুলিশ উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে থাকা ১০ ছাত্রীসহ আন্দোলনকারী ৪২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

এরপর রোববার কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে এক ছাত্রকে হাতকড়া পরিয়ে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ছবি আসে। 

গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নাজমুল হোসাইন নামের ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪২তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের ও জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক।

আন্দোলনের মধ্যে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম তাকে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এনাম মেডিকেলে নিয়ে যায়।

সেখানে গভীর রাতে বেডে শোয়া অবস্থায় নাজমুলের হাতে হাতকড়া পরানো হয় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

 

এ বিষয়ে সোমবার ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অসুস্থ অবস্থায় কাউকে হাতকড়া পরানো পুলিশ রেগুলেশনসের ৩৩০ (এ) বিধির লঙ্ঘন।

রেজাউল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, আদালত আশুলিয়া থানার ওসিকে তলব করার পাশাপাশি একটি রুল জারি করেছে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়া পরানো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে ওই রুলে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকার পুলিশ সুপার ও আশুলিয়া থানার ওসিকে এই রুলে বিবাদী করা হয়েছে।