ঝিনাইদহ গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে হাই কোর্টে তলব

ঝিনাইদহের মহেশপুরে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মেমোরিয়াল ভবন সংস্কার ও যথাযথভাবে সংরক্ষণে কী কী প্রয়োজন, সে বিষয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঝিনাইদহে গৃহায়ন ও গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে তলব করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2017, 01:31 PM
Updated : 28 May 2017, 01:31 PM

এ প্রকৌশলীকে আগামী ৫ জুন আদালতে হাজির হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে তাকে চাহিদা জানিয়ে প্রতিবেদনও জমা দিতে বলেছে আদালত।

একটি রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।

রিটকারীপক্ষে আদালতে শুনানি করেন এ বি এম আলতাফ হোসেন, শুভ্রজিৎ ব্যানার্জি এবং এ আর এম কামরুজ্জামান কাকন।

পরে আইনজীবী আলতাফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভবনটি কী অবস্থায় আছে এবং ভবন সংস্কারে কী কী প্রয়োজন- এসব বিষয় তদন্ত করে ২৩ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ভবন সংস্কারের বিষয়ে অন্তবর্তীকালীন একটি আদেশও দেওয়া হয়। সেসব আদেশের কোনোটিই প্রতিপালিত না হওয়ায় বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়।

“এ কারণে আজ আদালত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে তলব করেছেন এবং ৫ জুন তাকে হাজির হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।”

গত ১৯ জানুয়ারি ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত ‘ওয়ার হিরো মেমোরিয়াল অন ভারজ অব কলাপস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে ভবনটির জরাজীর্ণ দশার কথা তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ভবন সংস্কার ও সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে গত ২২ জানুয়ারি হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন মানবাধিকার সংগঠন ‘সমাজের প্রতি যুব উদ্যোগ’ এর সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ।

তিনি বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধে তার আত্মদানের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য তিন শতাংশ জমির ওপর ১৯৮১ সালে ওই ভবনটি গড়ে তোলা হয়। কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায়, সংস্কারের অভাবে এর সবকিছুই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

পরদিন শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও মোহাম্মদ উল্লাহর বেঞ্চ রুল জারি করে। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মেমোরিয়াল ভবন কেন সংস্কার ও যথাযথভাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।

সংস্কৃতি সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, ঝিনাইদহের মহেশপুরের গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও মহেশপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

পাশাপাশি ভবনটি কী অবস্থায় আছে এবং ভবন সংস্কারে কী কী প্রয়োজন- সে বিষয় তদন্ত করে ২৩ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে আদালত।

আদেশের পর আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটমকে বলেন, “জাতির জন্য, জাতির স্বাধীনতার জন্য তারা আত্মদান করেছেন। যদি তাদের স্মৃতি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা না হয় তাহলে আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও যোদ্ধাদের ভুলে যাবে।”