বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার তাদের আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান সবার জামিন মঞ্জুর করেন।
তিন ছাত্রীর আইনজীবী সানাউল ইসলাম টিপু জানান, এ মামলায় হামলা ও ভাঙচুরের পাশাপাশি গুরুতর জখম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নাজমুল হাসান রানা এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত শুক্রবার ভোরে সাভারের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় নিহত হন। ওইদিন দুপুরে এক ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাদের সহপাঠীরা।
এরপর নিহতদের লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে না এনে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষারোপ করেন। শনিবার দুপুর থেকে তারা ফের মহাসড়কে অবস্থান নিলে বিকালে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়।
এদিকে অবরোধের মধ্যেই ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিকালে পুলিশের হস্তক্ষেপে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দিলেও পরে উপাচার্যের বাসভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ভাংচুর চালায়।
এর মধ্যেই উপাচার্য সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। সিন্ডিকেটের সভা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষকরা বেরিয়ে এলে পুলিশ উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে থাকা ১০ ছাত্রীসহ আন্দোলনকারী ৪২ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি হল থেকে শিক্ষার্থীদের চলে যান। নতুন করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ।
আশুলিয়া থানার ওসি মহসিনুল কাদির জানান, শিক্ষক লাঞ্ছনা, ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে শনিবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আটক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে তাদের ঢাকার আদালতে তোলা হয় বলে জানান ওসি।