মন্দির-প্রতিমা ভাংচুর এবং জমি দখল ও বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে দেশ থেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর রিপোটার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা এসব অভিযোগ করেন।
ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হওয়া নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে এক ঘুষের মামলায় গত বুধবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসা শ্যামল কান্তি ভক্ত সাংবাদিকদের বলেন, তাকে চাপে রাখতে ‘প্রভাবশালী এক ব্যক্তির (সেলিম ওসমান) নির্দেশে ষড়যন্তমূলকভাবে’ ওই মামলা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, “শুরুতেই আমরা মিথ্যা অভিযোগে আটক শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের নিঃশর্ত মুক্তি এবং সারা দেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
“মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করে জমি দখলের পর বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও শ্লীলতাহানির মাধ্যমে হিন্দুদের নির্যাতন করে দেশ থেকে হিন্দু জনগোষ্ঠীকে উৎখাতের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।”
প্রকাশ্যে এসব হামলার ঘটনায়জড়িতদের পরিচয় পাওয়ার পরও তাদের বিচার হচ্ছে না বলে অভিযোগ হিন্দু পরিষদ সাধারণ সম্পাদকের।
সংগঠনের সভাপতি দীপংকর শিকদার দীপু বলেন, শুধু নারায়ণগঞ্জের শ্যামল কান্তি নয়, সারা দেশ আজ হিন্দু নির্যাতনের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
“আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। শ্যামল কান্তির মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তিসহ সারা দেশে হিন্দু নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যাণদীতে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে গত বছরের ১৩ মে তারই স্কুলে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে শারীরিক নির্যাতন ও কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনা ঘটে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশে।
এরপর ২৭ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, এক ছাত্রকে মারধর এবং এক শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে তিনটি মামলার আবেদন নারায়ণগঞ্জের আদালতে জমা পড়ে।
প্রাথমিক শুনানি করে আদালত প্রথম দুটি মামলার আবেদন খারিজ করে দিলেও ঘুষের অভিযোগের বিষয়টি বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়।
এ মামলার বাদী পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের অভিযোগ, চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে ২০১৪ সালে তার কাছ থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি তা করে দেননি।