ভাস্কর্য অপসারণ: আটকদের জামিন শুনানি রোববার

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 10:48 AM
Updated : 27 May 2017, 10:48 AM

তাদের জামিন আবেদন শুনানির জন্য রোববার দিন রেখেছেন ঢাকার মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার।

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি মোর্শেদ হালিম, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী জয় এবং উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফ নূরকে পুলিশের কথা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক এই আদেশ দেন।

ওই চারজনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী সোহেল আহমেদ ও জীবনানন্দ জয়ন্ত। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মকবুলুর রহমান।

পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের কোনো আবেদন করা হয়নি বলে আদালত পুলিশের এস আই মোজাম্মেল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

শুক্রবার মধ্যরাতে ভাস্কর্য অপসারণে কাজে শ্রমিকরা

সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশ পথে ফোয়ারার সামনে এখন আর নেই ভাস্কর্যটি

হেফাজতে ইসলামের দাবির মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সরানো হয়।

এর প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ব্যানারে একটি মিছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে এগোতে চাইলে শিশু একাডেমির সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।

মিছিলকারীরা ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশ প্রথমে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে; পরে জলকামান থেকে পানি এবং রবার বুলেটও ছোড়া হয়।

সেখান থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। রাতে তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন এসআই মোহাম্মদ মোফাক্কারুল ইসলাম।

শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিোর ডটকমকে জানান, মামলার এজাহারে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগের পাশাপাশি দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার পর প্রতিবাদী মিছিল রুখতে পুলিশের ব্যারিকেড

শুক্রবার ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস

রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’ এর আদলে এই ভাস্কর্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে।

এরপর হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন ভাস্কর্যটির বিরোধিতায় নামে। গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন এক দল ওলামার সঙ্গে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে এর নান্দনিক ‘ত্রুটির’ পাশাপাশি জাতীয় ঈদগাহের কাছে অবস্থানের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে তার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাকারীরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে মৌলবাদীদের সঙ্গে আপস করছে সরকার এবং এতে ধর্মীয় মৌলবাদ আরও উৎসাহিত হবে।

পুরনো খবর