শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
ন্যায় বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে তৈরি ভাস্কর্যটি অপসারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ভাস্কর্যটি গ্রিক পুরানের দেবী থেমিসের কিনা পাল্টা প্রশ্ন রাখেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি শুধু আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। এই মূর্তি কি থেমিসের মূর্তি? আমরা এটাকে থেমিসের মূর্তি বললেও এটা থেমিসের আসল মূর্তির রূপ না।
“আমার কাছে মনে হয় সেটা কোনো মূর্তিই ছিল না। এই মূর্তিটা সরিয়ে বরং ইসলামসহ অন্যান্য ধর্মের প্রতি সন্মান করা হয়েছে।”
ইসলামী সংগঠনগুলোর দাবিতে সরকার প্রধানশেখ হাসিনার সমর্থনের পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সরিয়ে ফেলা হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যটি।
ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে যুক্তি হিসেবে এর নন্দনতাত্ত্বিক সমস্যার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ঈদগাহের অবস্থানের কথা বলেছিলেন শেখ হাসিনা। গ্রিক দেবীকে শাড়ি পরানো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তবে লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া হলেও ভাস্কর্যটি অপসারণের সময় এটির সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ভাস্কর মৃণাল হক বলেন, এটি গ্রিক দেবীর নয় বরং বাঙালি মেয়ের ভাস্কর্য।
“গ্রিক দেবী ঠিক নয়, বলাও ঠিক হবে না। এটা গ্রিক ভাস্কর্য নয়, একটা বাঙালি মেয়ে, শাড়ি-ব্লাউজ পরা। গ্রিক হলে সেখানে অন্য পোশাক থাকত। ভুল জিনিস মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়।”
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গ্রিক দেবী থেমিসের সঙ্গে তুলনা করে ভাস্কর্যটিকে সেটির একটি ‘বিকৃতি রূপ’ বলে আখ্যায়িত করেন। একইসঙ্গে এ ধরনের ভাস্কর্য অপসারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি বলে ভাষ্য তার।
ভাস্কর্য অপসারণের ঘটনায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভে সরকারের বিরুদ্ধে মৌলবাদের তোষণ করার অভিযোগ আনা হয়।
ধর্মভিত্তিক হেফাজতে ইসলামের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনের পর ভাস্কর্য অপসারণ হলেও আইনজীবীদের মতামত নিয়ে প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তেই ভাস্কর্যটি সরানো হয় বলে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এবিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদর ও বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদও একই সুরে কথা বলেন।
এবার আইনমন্ত্রীও প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্তে ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়েছে বললেন।
আনিসুল হক বলেন, “এটা সরানোর ব্যাপারে আমরা আগেই বলেছি, এটার এখতিয়ার প্রধান বিচারপতির। আজকে আমরা দেখেছি ওনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হয়েছে।”
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা ও আত্মার উদ্যোগে তামাক নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকতা পুরস্কার বিতরণী উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে আইনমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকতা পুরস্কার তুলে দেন।