শিক্ষক শ্যামল কান্তির মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে তার মুক্তি চেয়েছে হিন্দুধর্মাবল্বীদের দুটি সংগঠন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2017, 12:41 PM
Updated : 26 May 2017, 12:41 PM

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট’ এবং ‘বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট’র ব্যানারে আলাদা মানববন্ধনে এই শিক্ষককের জামিনের দাবি আসে।

বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি প্রভাষ চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, “শ্যামল কান্তিকে যে মামলায় জেলে ঢোকানো হয়েছে তা জামিনযোগ্য অপরাধ, তাকে জামিন দেওয়া হোক, মামলা মামলার মত চলুক।”

তবে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের তোপের মুখে থাকা শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা ঘুষের মামলাটিতে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না হলে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

প্রভাষ বলেন, “শ্যামল কান্তি নিরীহ, সৎ এবং একজন ভাল মানুষ, এসব ঘটনা আর যেন না হয়।”

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সুবিতা হালদার বলেন, “শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা হিন্দুধর্মের লোকজন এই ঘটনায় আতঙ্কে আছি।”

অন্যদিকে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধনে বক্তারা একজন শিক্ষককে ঘুষের মামলায় জেলে পাঠানোয় লজ্জিত বলে মন্তব্য করেন।

একজন বলেন, “দেশে একের পর এক হিন্দুদের বাড়িঘর, মঠ, মন্দির ও ভাংচুর, জমি দখল এবং নানান অজুহাতে নির্যাতনের ঘটনায় সনাতন ধর্মের লোকজন দেশ ছাড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ অচিরেই হিন্দুশূন্য হয়ে যাবে।”

আগামী তিন দিনের মধ্যে শ্যামল কান্তির নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে মানববন্ধনে হুঁশিয়ারি করা হয়।

ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হওয়া নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে এক ঘুষের মামলায় গত বুধবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসা শ্যামল কান্তি ভক্ত সাংবাদিকদের বলেন, তাকে চাপে রাখতে ‘প্রভাবশালী এক ব্যক্তির নির্দেশে ষড়যন্তমূলকভাবে’ ওই মামলা করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যাণদীতে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে গত বছরের ১৩ মে তারই স্কুলে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে শারীরিক নির্যাতন ও কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনা ঘটে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশে।

এরপর ২৭ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, এক ছাত্রকে মারধর এবং এক শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে তিনটি মামলার আবেদন নারায়ণগঞ্জের আদালতে জমা পড়ে।

প্রাথমিক শুনানি করে আদালত প্রথম দুটি মামলার আবেদন খারিজ করে দিলেও ঘুষের অভিযোগের বিষয়টি বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়।

এ মামলার বাদী পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের অভিযোগ, চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে ২০১৪ সালে তার কাছ থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি তা করে দেননি।