ন্যানো স্যাটেলাইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’র গ্রাউন্ড স্টেশন উদ্বোধন

জাপানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি করা ন্যানো স্যাটলোইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’র গ্রাউন্ড স্টেশনের উদ্বোধন করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2017, 10:53 AM
Updated : 28 May 2017, 06:47 AM

বৃহস্পতিবার ব্র্যাক বিশ্বদ্যিালয়ের মহাখালীর ক্যাম্পাসের ৪ নম্বর ভবনের ছাদে এ গ্রাউন্ড স্টেশনাটির উদ্বোধন করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ফজলে হাসান আবেদ।

গ্রাউন্ড স্টেশনটির উদ্বোধন শেষে ব্র্যাক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশে গবেষণার ক্ষেত্রে খুব বেশি বিনিয়োগ করা হয় না। আমরা এখনও মনে করি, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো রিসার্চ করবে আর আমরা এর ফলাফল ভোগ করব।”

বিভিন্ন দেশে গবেষণা বাবদ জিডিপির ৩ শতাংশ ব্যয় করা হয় বলে জানান তিনি।

“অথচ আমরা গবেষণার ক্ষেত্রে ০.১ শতাংশও ব্যয় করি কিনা জানি না। আমাদের আস্তে আস্তে রিসার্চের ওপর নজর দিতে হবে। আমাদের দেশে সরকার যদি জিডিপির ১ শতাংশও গবেষণার জন্য ব্যয় করে, তাহলে আমরা উপকৃত হব।”

গবেষকরা তাদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন পায় না বলে অনেকেই হতাশ হয়ে বিদেশে চলে যায় বলে মনে করেন আবেদ।

তিনি বলেন, “সরকারের উচিত এ সায়েন্টিফিক রিসোর্সগুলো ধরে রাখার জন্য তাদের পেছনে বিনিয়োগ করা। তবেই দেশ উন্নত হবে।”

“আমাদের হিউম্যান রিসোর্স রয়েছে, এখন কেবল তাদের কাজে লাগানোর জন্য সম্পদ ব্যয় করতে হবে।”

এ সময় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ সাদ আন্দালিব বলেন, “ইউনিভার্সিটি, ইন্ডাস্ট্রি আর সরকারের যদি এক সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারে, তবে সব অসাধ্যই আমরা সাধন করতে পারব।”

ন্যানো স্যাটেলাইটটির নকশা তৈরি থেকে শুরু করে এর চূড়ান্ত কাঠামো তৈরির কাজ করেছেন ব্র্যাক বিশ্বদ্যিালয়ের তিন শিক্ষার্থী রায়হানা শামস ইসলাম, আবদুল্লা হিল কাফি ও মাইসুন ইবনে মানোয়ার।

অপরদিকে গ্রাউন্ড স্টেশনে ছয় শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীতে আরও পাঁচ শিক্ষার্থী যোগ দেন। অ্যান্টেনা সংযোজন, টাওয়ার স্থাপন ও স্টেশন নির্মাণের কাজে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ আর তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ।

১০ সেন্টিমিটার কিউব ও ১ কেজি ভরের ন্যানো স্যাটেলাইটটি আগামী ২ রা জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে স্পেসএক্স ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে উৎক্ষেপণ করা হবে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব কিউশু ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যানো স্যাটেলাইটটি গ্রহণ করে সেটি উৎক্ষেপনের জন্য জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির কাছে হস্তান্তর করেন।

গত বছরের জুন মাসে ন্যানো স্যাটেলাইট নির্মাণ ও মহাকাশে তা উৎক্ষেপনের জন্য জাপানের ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির (কেআইটি) সঙ্গে চুক্তি করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।

ন্যানো স্যাটেলাইটটি পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করবে এবং এটি পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করতে ৯০ মিনিট সময় লাগবে। এটি ১৬ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে আর বাংলাদেশকে প্রদক্ষিণ করবে ৪ থেকে ৫ বার। স্যাটেলাইটটি থেকে মানসম্মত ছবি নেওয়া, জাতীয় সঙ্গীত সম্প্রচার, মহাকাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা যাবে।