সারাদিন রোজা শেষে ইফতারে বিশুদ্ধ পানীয়, মিষ্টান্ন ও তাজা খাবার গ্রহণের মত রয়েছে তাদের।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘নিরাপদ খাদ্যের আলোকে রমযান মাসের রকমারি ইফতার’ শীর্ষক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞদের এ মতামত উঠে আসে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুল হক, বীজ বিস্তার ফাউন্ডেশনের সভাপতি এমএ সোবহান বক্তব্য রাখেন।
মূল আলোচনা উপস্থাপন করেন এফএও ফুড সেইফটি প্রোগ্রামের সিনিয়র ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার ডা. শাহ মুনীর হোসেন।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব উৎপাদক, পরিবেশক, ভোক্তাসহ সব মহলের। পুলিশিং কিংবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এটি সম্ভব নয়।
“অনেক সময় সঠিক ধারণার অভাবে ভালো খাবারও আমরা নষ্ট করে খাই। হোটেল ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র সঠিক জ্ঞানের অভাবে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করে। তাই এসব বিষয়ে সবার সজাগ হওয়া প্রয়োজন।”
সেহরি ও ইফতার নিয়ে পরামর্শ
> ইফতারে বেগুনি, পেঁয়াজুসহ অন্যান্য ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলতে হবে।
> বেশি মসলাযুক্ত খাবার পাকস্থলির জন্য ‘ইরিটেটিং’, এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
> জাঙ্কফুড পরিত্যাগ করতে হবে।
> নিরাপদ খাবার কিনে বাসায় অনিরাপদ স্থানে রাখলে মান নষ্ট হতে পারে। তাই খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
> ফুটপাতে বিক্রি হওয়া ইফতার অসংখ্য মানুষের সংস্পর্শে আসার কারণে জীবাণু আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। এসব এড়াতে হবে।
> অধিক চিনিযুক্ত খাবারও পরিত্যাগ করা উচিত।
> ইফতারে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন।
> শরবত তৈরিতে ব্যবহৃত পানি ও বরফ বিশুদ্ধ কিনা জেনে নিতে হবে।
> ইফতারিতে ফলফলাদি থাকা উচিত।
> জলীয় খাবার পাকস্থলীর জন্য অধিক সহনীয় ও স্বস্তিকর।এসব বেশি গ্রহণ করা উচিত।
অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক বলেন, বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইন বাস্তবায়নে তার অধিদপ্তর যেকোনো বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চায়।
গরমের মওসুমের রোজায় ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাজারে এখনকার ফলফলাদিতে ক্ষতিকর ফরমালিন নেই। ফল সংরক্ষণের জন্য যা দেওয়া হয় তাও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। তাই ফল নিশ্চিন্তে ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।”
ফরমালিন নিয়ে প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “তরমুজে রং, নকল ডিম নিয়ে অনেক প্রতিবেদন দেখেছি। আসলে এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।”
বাংলাদেশ ফুড সেইফটি নেটওয়ার্ক আয়োজিত মতবিনিময়ে উবিনীগ, বিসেফ, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড, শিশুউক এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।