তাপদাহের সঙ্গে লোড শেডিংও আরও কয়েক দিন

জ্যৈষ্ঠের তাপদাহে জনজীবনে যখন হাঁসফাস অবস্থা, তখন বিদ্যুতের লোড শেডিং তা অসহনীয় করে তুলেছে।

ফয়সাল আতিক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2017, 05:58 PM
Updated : 22 May 2017, 06:59 PM

এই সপ্তাহে গরম কমার কোনো আভাস না পাওয়ার মধ্যে বিদ্যুৎকর্তারাও জানিয়েছেন, রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ অন্তত ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, পরিস্থিতির উন্নতিতে আরও তিন-চার দিন লাগবে।

কয়েকদিন ধরেই তাপদহ চলছে দেশজুড়ে; সোমবার ঢাকায় ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই কয়েক দিন ধরে চলছে লোড শেডিং।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দিনে ৩ থেকে ৪ বার করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুতহীন থাকার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

এই অবস্থায় সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

ঝড়ে খুঁটি ভেঙে যাওয়া, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকা এবং উৎপাদনের কাঁচামাল গ্যাসের স্বল্পতাকে এর কারণ দেখিয়েছেন তিনি।

তিন-চার দিন সময় চেয়ে নসরুল বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চার দিনের ভিতর উৎপাদনে আসবে। রমজানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”

রোববার (২১ মে) বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৯ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। বিপরীতে দিনের বেলা সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ৭ হাজার ২২০ মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যায় ৮ হাজার ৪৮৩ মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎ বিভাগের জনসংযোগ শাখার পরিচালক সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩৪০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিবিয়ানা, ৪৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার মেঘনাঘাট, আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়েকটি ইউনিট, ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে।

“ফলে অধিক চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের উৎপাদনে বেশ খানিকটা কমে গেছে।”

এই সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “রমজানে অধিক লোডের কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটি যাতে না দেখা দেয়, সেই জন্যই এখন করা হচ্ছে।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শেরপুর প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজের জন্য মঙ্গলবার ভোর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোটা জেলায় বিদ্যুৎ থাকবে না বলে জানিয়ে মাইকিং হয়েছে।

এদিকে প্রতিমন্ত্রী সোমবার বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুতের উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার সার্বিক অবস্থা কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা করেন।

কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে সমন্বয় রেখে কাজ করা উচিৎ। লোড ম্যানেজমেন্টে লোড শেডিং সমানুপাতিক হারে করতে হবে।

লোড শেডিংয়ের আগেই গ্রাহকদের জানানোর নির্দেশনা দেন তিনি।

সভায় সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণরত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য যুগ্মসচিব শেখ ফয়েজুল আমীনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এলএনডিসি বিতরণ সংস্থাগুলোকে কিভাবে/কী পরিমাণ বিদ্যুৎ দিচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় যুগ্মসচিব এ কে এম হুমায়ুন কবীরকে।