বনানীর ধর্ষণ মামলা: পুলিশের গাফিলতি ‘মাইনর’

দুই তরুণী ধর্ষণের মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে বনানী থানা পুলিশের গাফিলতি থাকলেও তা গৌণ বলে মনে করছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2017, 12:00 PM
Updated : 22 May 2017, 12:00 PM

“কিছু ব্যত্যয় হয়েছে। মেজর কিছু না হলেও আইনের মাইনর কিছু ব্যত্যয় হয়েছে,” বলেছেন তিনি।

আলোচিত এই ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ ওঠার পর তা তদন্ত করতে পুলিশ কমিটি গঠন করে। ওই তদন্তে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সোমবার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।

কী কারণে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে- প্রশ্নে তিনি গৌণ গাফিলতির বিষয়টি তুলে বলেন, “কিছু ব্যত্যয় না হলে যারা মামলা নিয়েছেন, তাদের কৈফিয়ত তলব করব কেন?”

রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষিত হওয়ার অভিযোগ তুলে মামলা করতে গিয়ে বনানী থানার ওসি ফরমান আলীসহ দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এক ছাত্রী।

অভিযোগ ওঠে, মামলার আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে, হোটেলটির মালিক আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্যের ছেলে হওয়ায় পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। 

বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সমালোচনামুখর হন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হকও।

তিনি বলেন, “এই পুলিশের প্রয়োজন কি আমাদের? দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৪ মে বনানী থানায় মামলা করতে গেলে তাদের দুই দিন ঘোরায় পুলিশ, এমনকি মেয়ে দুটির চরিত্র হনন করা হয়েছে। একটি মামলা নিতে দুই দিন লাগে?”

তার বক্তব্যের পর পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,ঘটনার এক মাসের বেশি সময় পর মামলা করতে আসায় অভিযোগের সত্যতা নির্ণয়ে সময় লেগেছে।

ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া (ফাইল ছবি)

আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “পেশাদার বাহিনী হিসেবে পুলিশ আইনের বাইরে একটি কাজও করেনি। ন্যায়বিচার ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো কাজ করেনি।”

ফৌজদারি কার্যবিধির উল্লেখ করে তিনি বলেন, থানার ওসির কাছে কোনো অভিযোগ আসার পর যুক্তিসঙ্গতভাবে যদি তিনি মনে করেন সেটার প্রাথমিক সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা আছে, যাতে নিরীহ লোক হয়রানি না হয় এবং অপরাধীর সাজা হয় তাহলে সেটা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেন তিনি।

“ওই ঘটনাটি ঘটার এক মাস সাত দিন পর পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে কেন আগে অভিযোগ এল না। তাই প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হয়েছে,”

আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলেসহ মামলার পাঁচ আসামির সবাইকে গ্রেপ্তার করাকে পুলিশের আন্তরিকতার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন ডিএমপি কমিশনার।

পুলিশের উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অতীতে এমন কিছু করিনি যে আস্থা রাখতে পারবেন না। সুস্পষ্টভাবে বলি, পেশাদারিত্বের বাইরে আবেগ-অনুরাগ আমরা প্রকাশ করব না। কারও কোনো আইনের ব্যত্যয় ঘটলে তার দায়িত্ব পুলিশ নেবে না। ন্যায়বিচার যেন নিশ্চিত হয়, সে জন্য কাজ করব।”