ছাত্রীর মৃত্যু: সেন্ট্রাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ঢাবির মামলা

এক ছাত্রীর মৃত্যুর পর ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে মামলা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদকও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2017, 05:24 PM
Updated : 18 May 2017, 05:52 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হলে তার সতীর্থরা গ্রিন রোডের বেসরকারি ওই হাসপাতালটিতে ভাংচুরও চালিয়েছিল। এরপর রাতে মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আফিয়া জাইন চৈতির মৃত্যুর জন্য ভুল চিকিৎসাকে দায়ী করছে শিক্ষার্থীরা। তবে এই বিষয়ে হাসপাতালটির চিকিৎসকদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আফিয়ার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। শামসুন্নাহার হলে সংযুক্ত এই ছাত্রী থাকতেন পলাশী এলাকায়।

তার সহপাঠীরা জানায়, বুধবার ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাকে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আফিয়া আক্তার

এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, “তখন ডাক্তাররা বলেছিল আফিয়ার লিউকেমিয়া (ব্লাড ক্যান্সার) হয়েছে। সেই অনুযায়ীই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) তারা বলে, তার ডেঙ্গু হয়েছিল।”

আফিয়ার মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের আগেকার ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভাঙচুর করে।

ডিএমপির ধানমণ্ডি জোনের সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহেল কাফী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আফিয়া মারা যাওয়ার পর বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর করে। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের একজন বোন ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক ক্ষোভের কারণে হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে- এটাই আমাদের দাবি।”

রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী চিকিৎসকসহ সেন্ট্রাল হাসপাতালের নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা কাফী।

সেন্ট্রাল হাসপাতাল

তিনি বলেন, “নয়জন আসামির মধ্যে চিকিৎসক, সেবিকা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রয়েছে।”

আসামিরা হলেন- অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, কাশেম ইউসুফ, ডা. মর্তুজা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম মাতলুবুর রহমান, ডা. মাসুমা পারভীন, ডা. জাহানারা বেগম মোনা, ডা. মাকসুদ পারভীন ও ডা. তপন কুমার  বৈরাগী এবং হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ কাশেম।

মামলার আসামি হাসপাতালের পরিচালক এম এ কাসেম থানায় উপস্থিত ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা কাফী।

ঢাকায় ছাত্রী আফিয়ার পরিবারের কেউ না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মামলা করা হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটা পরিবারের স্বপ্ন যে ধ্বংস হল, স্বপ্ন ভঙ্গ হল কিছু ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও গাফিলতির জন্য- এটার দায়দায়িত্ব তাদের নেওয়া উচিৎ।

“এরকম যারা সেবক থাকবে, তারা যদি সেবক না হয়ে ব্যবসায়ীর মতো আচরণ করে, তাহলের তাদের এটার জন্য শাস্তি পাওয়া উচিৎ।”