এনসিটিবির শুদ্ধিপত্র পেয়ে তা অনুসরণে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাঠিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলছেন, প্রাথমিকের বইয়ের শুধু ‘মৌলিক ভুলের’ সংশোধনী দিয়েছেন তারা, মাধ্যমিকের বইয়ে ‘মৌলিক কোনো ভুল পাওয়া যায়নি’।
২০১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম শ্রেণির একটি, তৃতীয় শ্রেণির তিনটি এবং পঞ্চম শ্রেণির দুটি বইয়ের ছয়টি সংশোধনী দিয়ে শুদ্ধিপত্র দেয় এনসিটিবি।
সংশোধনী
>> প্রথম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় ‘মৌ’ এর স্থলে ‘মউ’।
>> তৃতীয় শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের ৬৮ পৃষ্ঠায় কুসুমকুমারী দাশের আদর্শ ছেলে কবিতার বিস্তারিত সংশোধনী দেওয়া হয়েছে।
>> তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ‘ঘোষনা’ বানান শুদ্ধ করে ‘ঘোষণা’ করা হয়েছে।
>> তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ৫৮ পৃষ্ঠায় ‘সায়েরা বেগম’ এর স্থলে ‘সায়েরা খাতুন’ সংশোধনী এসেছে।
>> তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি ভার্সনের হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘Heart’ এর স্থলে ‘Hurt’ হবে।
>> পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের তৃতীয় পৃষ্ঠায় ‘সমুদ’ বানান ঠিক করে ‘সমুদ্র’ করা হয়েছে।
>> পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ‘ঘোষনা’ বানানটি ঠিক করে ‘ঘোষণা’ করা হয়েছে।
অধ্যাপক নারায়ণ বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রাথমিক স্তরের বইয়ের মৌলিক ভুলগুলোর সংশোধনী দেওয়া হয়েছে, প্রাথমিকের বইয়ের আর কোনো মৌলিক ভুল নেই। বড় ভুল ছিল আদর্শ ছেলে কবিতায়।”
প্রাথমিকের বইয়ে ছাগলের গাছে উঠে আম খাওয়ার চিত্র এবং ওড়না নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে তা আগামী শিক্ষাবর্ষের নতুন বইয়ে পরিমার্জন করা হবে বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা জানান, পাঠ্যপুস্তকে ভুল নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর একটি কমিটি বিভিন্ন ভুল খুঁজে বের করে সংশোধিত আকারে সুপারিশ দেয়।
“ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিরে শুদ্ধিপত্র তৈরি করে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় অনেক দেরিতে অনুমোদন করায় শুদ্ধিপত্র দিতে বিলম্ব হয়েছে।”
বছরের প্রথম দিন ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থীর হাতে এবার ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকার।
নতুন পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে ফেইসবুকে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে পাঠ্যবই পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে এনসিটিবি। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও দায়ীদের চিহ্নিতে একটি কমিটি করেছিল।
ওইসব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তকে ভুলের ঘটনায় দায়ী এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন আটজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়।
ভুলের পাশাপাশি বিভিন্ন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলামের দাবি মানা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।