সোমবার সন্ধ্যার পর আধা ঘণ্টার ব্যবধানে গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং দেহরক্ষী রহমত আলীকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাব ও পুলিশ।
বিল্লালকে নবাবপুর রোডের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানান র্যাব-১০ এর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মাতুব্বর।
অন্যদিকে রহমতকে গুলশান থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের কথা জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
সাফাতের সঙ্গে এই দুজনও ধর্ষণের ওই মামলার আসামি।
মামলার চার দিন পর সাফাতকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরেক আসামি সাদমান শাকিফ। সাদমান পিকাসো রেস্তোরাঁর অন্যতম মালিক ও রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে।
পাঁচ আসামির মধ্যে নাঈম আশরাফ বা হাসান মোহাম্মদ হালিম এখনও পলাতক।
এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে সাফাত ও নাঈম দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছিলেন। অন্য তিনজন ছিলেন সহায়তাকারী।
অভিযোগকারী তরুণীদের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, পীড়াপীড়িতে বাধ্য হয়ে ২৮ মার্চ রেইনট্রি হোটেলে সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তারা, তাদের নিতে গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন সাফাতের গাড়িচালক ও দেহরক্ষী।
ধর্ষণের সময় দেহরক্ষী রহমতকে দিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন ওই তরুণী।
গত ৬ মে মামলার পর পালিয়ে যাওয়া সাফাত ও সাদমানকে গত ১১ মে সিলেট থেকে গ্রেপ্তারের পর অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কৃষ্ণপদ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলের সামনে থেকে রহমতকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
তার কাছ থেকে একটি শটগান এবং ১০ রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে জানিয়ে ডিএমপির উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, “অস্ত্রটির লাইসেন্স আছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখব।”
অন্যদিকে কৃষ্ণপদ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রহমতের সঙ্গে থাকা অস্ত্রটি লাইসেন্স করা।”
ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহজাহান ও সহকারী কমিশনার সাকলাইন এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
শাহজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রহমত তার এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিল। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে ওঁৎ পেতে ছিলাম।”
অন্যদিকে র্যাব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর মাতুব্বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবাবপুরে হোটেল ইব্রাহীম থেকে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
অন্য আসামিদের সঙ্গে বিল্লালও সিলেটে পালিয়েছিলেন বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
“সে সকালেই সিলেট থেকে ঢাকায় এসে এই হোটেলে উঠে। আগাম জামিন নেওয়ার জন্য হোটেলে বসে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল।”
র্যাব জানিয়েছে, বিল্লাল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই তরুণী হোটেলে নিয়ে আসা এবং ধর্ষণের সময় ভিডিও ধারণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
বিল্লাল র্যাবকে বলেছেন, গত ৬ মে মামলা দায়েরের খবর শুনে সাফাতসহ তারা সিলেটে চলে যান। সেখান থেকে তিনি ছাতক চলে যান। তারপর সিলেট হয়ে সোমবার ভোরে তিনি ঢাকায় ফেরেন।
বিল্লালের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামের দাড়িডোমা গ্রামে, তার বাবার নাম সিরাজুল ইসলাম।