আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাতের সঙ্গে এই মামলার আরেক আসামি সাদমান সাকিফকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আইজিপি মো. শহীদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
তিনি বৃহস্পতিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের সিলেটে গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় আনা হচ্ছে।”
সাফাত (২৬) আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে। গ্রেপ্তার সাদমান (২৪) পিকাসো রেস্তোরাঁর অন্যতম মালিক ও রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে।
দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের এই মামলায় সাফাতের আরেক বন্ধু নাঈম আশরাফ (প্রকৃত নাম হাসান মো. হালিম), সাফাতের দেহরক্ষী ও গাড়িচালক।
মামলার এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণ করেন সাফাত ও নাঈম। সাদমানসহ অন্য তিনজন ছিলেন সহযোগী।
অভিযোগকারী এক তরুণী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাদমান তাদের বন্ধু; তাদের দুই বান্ধবীকে সেই পীড়াপীড়ি করে সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে ডেকে নিয়েছিল।
ওই দুই তরুণী বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঘটনার মাসখানেক পর গত ৬ মে এক তরুণী বনানী থানায় মামলা করার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সাফাত গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের সমালোচনাও ওঠে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সিলেট প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর পাঠানটুলা এলাকার এক প্রবাসীর বাসা থেকে সাফাত ও সাদমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিলেট মহানগর পুলিশ ও ঢাকার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক নুরুন্নবী সাংবাদিকদের বলেন, লন্ডন প্রবাসী মামুনুর রশিদের মা বাড়িটিতে থাতেন। তবে মালিকের মা বুধবার বিকালে গ্রামের বাড়ি যান।
“রাত সাড়ে ১১টার দিকে মালিকের পরিচিত কাজীরবাজার এলাকার এক ব্যক্তি এই দুইজনকে নিয়ে আসেন। তাদের আমি চিনতে পারি নাই। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় তারা থাকছিলেন। আজ রাতে হঠাৎ করে পুলিশ এসে তাদের গ্রেপ্তার করে।”
ঢাকা থেকে পালিয়ে সাফাতসহ চারজন সোমবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকায় ঠাকুরবাড়ি রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে গিয়েছিলেন বলে জানান রিসোর্টটির ব্যবস্থাপক মোবারক হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি মাইক্রোবাসে করে সাফাতসহ চারজন রুম ভাড়া নেওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু তারা কোনো পরিচয়পত্র দেখাতে পারেনি বলে রুম দেওয়া হয়নি। তখন তারা ফিরে যান।
“তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আমরা চিনতে পারিনি। পরে বুঝতে পেরেছি তাদের মধ্যে সাফাত রয়েছেন।”
রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পেয়ে পুলিশও তৎপর হয় বলে জানান অতিরিক্ত এসপি সুজ্ঞান চাকমা।
তিনি বলেন, “পুলিশের কাছে খবর ছিল যে তারা সিলেট এসেছেন। তাদের খোঁজা হচ্ছিল।”
পুলিশ তাদের নিয়ে রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দল এলআইসি স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করেছে।