জামিন পাওয়া অন্য আসামি হলেন উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. জহুরুল ইসলাম।
রোববার দুইজন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন দেন।
ভুল তথ্য দিয়ে হৃদযন্ত্রে রিং বসাতে বাধ্য করার চেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর কাওলা দক্ষিণখানের বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান কামরুল গত ২১ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ মামলা করেন।
লুবানা হাসপাতালে করা এনজিওগ্রামের রিপোর্টে ‘হৃদযন্ত্রের ধমনীতে ব্লকের পরিমাণ ‘প্রতারণামূলকভাবে’ বেশি দেখিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আসামিরা রিং বসানোর উদ্যোগ নেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, কামরুল গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বুকে ব্যথা ও চাপ অনুভব করলে তাকে উত্তরার সোনারগাঁও জনপদের উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে তার ইসিজি করে চিকিৎসকের রাকিবুলের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করে নেন।
পরদিন আবার ইসিজির সঙ্গে আরও কিছু পরীক্ষার পর রাকিবুল রোগীর স্বজনদের নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে ‘হৃদযন্ত্রে সমস্যা থাকায় এনজিওগ্রাম করতে হবে’ বলেন।
‘কম খরচে উন্নত চিকিৎসার’ কথা বলে রোগীকে লুবানা জেনারেল হাসপাতালে যেতে বলেন তিনি। কামরুল সেদিনই ওখানে ভর্তি হলে চিকিৎসক রাকিবুল নিজেই তার এনজিওগ্রাম করেন।
পরে রাকিবুল রোগীর স্বজনদের বলেন, রোগীর হৃদযন্ত্রে ব্লকের পরিমাণ ৯০ শতাংশ, জরুরি ভিত্তিতে রিং না বসালে বিপদ হবে, এমনকি রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ওই দুই আসামি রিংয়ের দাম এবং আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সেবাসহ রোগীর স্বজনদের কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা রিং বসাতে সম্মত না হলে তাদের সঙ্গে চিকিৎসক রাকিবুল দুর্ব্যবহার করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, পরে রোগী শেরেবাংলা নগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি হলে এনজিওগ্রাম রিপোর্ট দেখে সেখানকার চিকিৎসক জানান, ব্লকের পরিমাণ এত সামান্য যে আদৌ রিং বসানোর দরকার নেই।
তবে রাকিবুল তার আগের অবস্থানেই অটল থাকার কথা আদালতে জানিয়েছেন। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে রিং বসানোর দরকার নেই বলে মামলায় বলা হয়েছে, তা ওই চিকিৎসক অস্বীকার করেছেন।
এই মামলার বাদী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই মামলাটি করেছেন বলে ডা. রাকিব পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।
কামরুজ্জামান কামরুলের বিরুদ্ধে অর্থ চাওয়ার অভিযোগ তুলে থানায় জিডি করেছেন বলেও এই চিকিৎসক জানান।