শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে সামনে রমেল চাকমা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে নাগরিকবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে এ নাটিকার মঞ্চায়ন হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) রাঙামাটির নানিয়ার চর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক রমেলকে গত ৫ এপ্রিল সেনাসদস্যরা তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
নানিয়ারচর সরকারি কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল হত্যাকাণ্ডে সেনা সদস্যদের এমন ভূমিকা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরে নাট্যদল প্রাচ্যনাটের সদস্যরা।
নাটিকার নির্দেশক সাইফুল জানার্ল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটার পর একটা হত্যাকাণ্ড হয়ে যাচ্ছে আমাদের এখানে, যেটা বিচার ছাড়া হচ্ছে। যত বড় অপরাধীই হোক, আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের মধ্য দিয়ে শাস্তি হওয়া উচিত। আদিবাসী বলে এটা আমাদের কোনো ইস্যু না।যেকোনো মানুষকে এভাবে মারা যেতে পারে না।”
তিনি বলেন, “বিচারবহির্ভূত হত্যারকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা এটা করেছি। এটা শুধু সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তা নয় কিন্তু, এটা শক্তিশালীদের বিরুদ্ধে। তারা সবসময় দুর্বলদের বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনী এখানে মূলত প্রতীকী।”
রমেল চাকমা হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আয়োজিত এ সমাবেশ থেকে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক নিপীড়নের অবসান’র দাবিও করা হয়।
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বাকী বিল্লাহর সঞ্চালনায় এ প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহম্মদ বলেন, “বাঙালি স্বার্থের নামে পাহাড়ের আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে, কিন্তু বাঙালিদের ক্ষেত্রে তার পাল্টা চিত্র দেখি। তাহলে কোন স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে?
বাঙালি-পাহাড়ির ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “পাহাড়িদের বিরুদ্ধে যে নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। বাঙালি পাহাড়ি ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের মাধ্যমে এই নির্যাতনের থেকে মুক্ত হতে পারে।”
রমেল চাকমা হত্যার জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিনয়ন চাকমা বলেন, “রমেল চাকমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। এর সঙ্গে জড়িত মেজর তানভীরসহ সকলের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
পাহাড়ে সেনা শাসন চলছে দাবি করে তা প্রত্যাহার করে পাহাড়ের মানুষের ওপর সেনাবাহিনীর বর্বরতা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।
ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দী বলেন, “নানা ধরনের অভিযোগ তুলে ধরা হচ্ছে রমলা চাকমার বিরুদ্ধে। কিন্তু পুলিশ বলছে রমেলের নামে কোনো মামলা নেই। তাহলে কেন রমেলকে হত্যা করা হল। এর বিচার করতে হবে।”
নাগরিক উদ্যোগের জাকির হোসেন বলেন, “বাঙালির লজ্জা হওয়া উচিত। একাত্তরের পাক আর্মিরা যে ধরনের নির্যাতন চালিয়েছিল, সে ধরনের নির্যাতন আদিবাসীদের ওপর করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে বাঙালিদের প্রতি ঘৃণা কাজ করছে। এটা লজ্জাকর।”
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে গণসংগীত শিল্পী কফিল আহমেদ, ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আল ইমরান বক্তব্য রাখেন।