খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকাণ্ড স্মরণ

রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশে প্রথম ‘জেল হত্যা’র ঘটনা বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2017, 04:33 PM
Updated : 28 April 2017, 04:33 PM

শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে খাপড়া ওয়ার্ড দিবস উপলক্ষে আয়োজিতি এক স্মারক বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক আকাশ বলেন, “খাপড়া ওয়ার্ড রাজশাহী জেলের অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি বাংলো-টাইপ ঘর। মাটি থেকে একটু উচুঁতে অবস্থিত। অনেকগুলো জানালা চর্তুদিক থেকে ঘিরে রয়েছে এই ঘরটি। এই ওয়ার্ডেই ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল সংঘটিত হয় বাংলাদেশের প্রথম ‘জেল হত্যা’।

“জেল হত্যা বললে আমরা সচরাচর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরের জেল হত্যাকেই বুঝিয়ে থাকি। কিন্তু ওই ৩রা নভেম্বর সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশি অবহিত হলেও খাপড়া ওয়ার্ডের নিষ্ঠুর জেল হত্যা সম্পর্কে অতটা অবহিত নই।”

খাপড়া ওয়ার্ড ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ স্মারক বক্তৃতায় সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক কামাল লোহানী।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “খাপড়া ওয়ার্ডে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের কথা আমরা মনে করতে চাই না। আমাদের জাতীয়তাবাদী দলগুলোর কমিউনিস্টদের প্রতি এক ধরনের অনীহা আছে। অথচ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন নিয়ে এখন যে খামচা-খামচি হচ্ছে তাতে কমিউনিস্টদের অনেক অবদান আছে।

“একাত্তরের পরে কমিউনিস্টদের আন্দোলন আর জমছে না। এর আগে তাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে।”

খাপড়া ওয়ার্ডের ত্যাগ আমাদের লড়াই সংগ্রামে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল বলে মন্তব্য করে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, “সেদিনের শহীদেরা এখনও আমাদের কাছে আদর্শ হয়ে আছে।”

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “দায়বদ্ধতা, মাটি ও মানুষের প্রতি একনিষ্ঠতা- এ বিষয়গুলো এখন প্রশ্নের মুখে। বাংলাদেশ আছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পথে নেই।”

খাপড়া ওয়ার্ডের ত্যাগ এখনও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে বলে মনে করেন অজয় দাশ গুপ্ত।

তিনি বলেন, “তাদের ত্যাগের জায়গাগুলো স্মরণ করলে কোনো না কোনোভাবে মানুষ অনুপ্রাণিত হয়। তাদের এ অবদানকে মানুষ এখনও স্বীকার করে, বিশ্বাস করে।”

বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনে খাপড়া ওয়ার্ডের হত্যাকাণ্ড একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন সাংবাদিক খন্দকার মুনীরুজ্জামান।

“এদেশের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে খাপড়া ওয়ার্ড একটি তাৎপর্যময় ঘটনা। ব্রিটিশরা যাদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে যাচ্ছিল, তারা সবাই ছিল বামবিরোধী। আর খাপড়া ওয়ার্ডের সবাই ছিল কমিউনিস্টপন্থি।”