ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বৃহস্পতিবার রাতে একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে পিস্তল, গুলি ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ঢাকায় সংগঠনের একজন ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞের’ সহায়তায় বোমা তৈরির পর তা দিয়ে তারা বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানান র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান।
শুক্রবার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার তিনজনকে হাজির করে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- তামিম দ্বারী (৩২), কামরুল হাসান ওরফে কাজল ওরফে নুরউদ্দিন (২৬) এবং মো. মোস্তফা মজুমদার ওরফে শিহাব (৩২)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা মাহমুদ খান বলেন, “তারা নাশকতার উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ঢাকায় আসছিল।ঢাকার একটি স্থানে তাদের একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞের সহায়তায় বোমা তৈরি করে পরে তা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নাশকতা করার পরিকল্পনা ছিল।”
তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, প্রায় সোয়া কেজি প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভসহ আইইডি তৈরির সরঞ্জাম, তিনটি চাকু, একটি চাপাতি এবং ল্যাপটপসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
তামিম চৌধুরীর ‘ঘনিষ্ঠ ছিলেন’ তামিম দ্বারী
র্যাবের ভাষ্য মতে, সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার খড়িয়াটি উত্তরপাড়া গ্রামের গৌরাঙ্গ কুমার মণ্ডল (৩২) এইচএসসি পড়াকালে ২০০৩ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তামিম দ্বারী নাম নেন।
এরপর বিভিন্ন সময়ে আব্দুল্লাহ আল হাসান, আজিজুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল জাফরী, আমীর হামযা ও আল হুযাইকা নামে নিজের পরিচয় দেন তিনি।
ধর্মান্তরিত হয়ে তাবলিগ জামাতের অনুসারী ছিলেন তামিম দ্বারী। ২০০৫ সালে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কয়েক মাস সেখানে লেখাপড়া করেন।পরের বছর চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে ২০০৭ সালে লেখাপড়া শেষ করেন।
এরপর ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের বিভিন্ন জাহাজে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, তামিম চৌধুরীর সঙ্গে তামীম দ্বারীর পরিচয় হয় ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরে।
অপর দুই জঙ্গির বৃত্তান্ত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা মো. মোস্তফা মজুমদার ওরফে শিহাবও পেশায় প্রকৌশলী।
র্যাবের মুখপাত্র জানান, ২০০৫ সালে কুমিল্লা পলিটেকনিকের ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেন।পরে ২০০৭ সালে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেন।২০১৪ সালে তামীম দ্বারীর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তার মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ান।
যশোর সদরের আজমতপুর গ্রামের কামরুল হাসানের বাবা বিলুপ্ত সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ‘বিডিআরের’ একজন হাবিলদার ছিলেন।বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত অভিযোগে তার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, ২০০৬ সালে কুমিল্লায় একটি মাদ্রাসায় পড়ার সময় জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যান কামরুল।২০১৪ সালে তামিম দ্বারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়।