প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অনেকটাই সফল: সাঈদ খোকন

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছরে অধিকাংশ পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র সাঈদ খোকন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2017, 09:52 PM
Updated : 26 April 2017, 09:52 PM

সমস্যাসঙ্কুল এই নগরীর সেবাখাতের মৌলিক প্রয়োজনগুলো মেটানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রথম দুটি বছর অতিক্রম করেছেন বলে জানান তিনি।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল নির্বাচনের পর ৬ মে শপথ নেন সাঈদ খোকন। বুধবার নগর ভবনে নির্বাচনের সময় দেওয়া নিজের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা করেন তিনি।

এ সময় কর্মসূচি বাস্তবায়নে নানা সাফল্যের পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে অপূর্ণতা বা ব্যর্থতা রয়েছে বলেও স্বীকার করেন ঢাকার প্রথম মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে।

সাঈদ খোকন বলেন, প্রথম দুই বছর পরিচ্ছন্নতা, যানজট নিরসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পার্ক, খেলার মাঠ দখলমুক্ত করাসহ মৌলিক নাগরিক সমস্যাগুলোর সমাধানের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। আগামী দিনে স্মার্ট সিটি নিয়ে কাজ করবেন।

“ইতোমধ্যেই ১২টি খেলার মাঠ উদ্ধার করা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ কিছু সেকেন্ডারি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। স্থানে স্থানে ৫ হাজারেরও বেশি বাস্কেট বসানো হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা অভিযান কিছুটা হলেও সফল হয়েছে।”

স্মার্ট ঢাকার ব্যাখ্যা দিয়ে মেয়র বলেন, “শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শক্তিশালী সিসি ক্যামেরা বসবে। এসব ক্যামেরা শুধু ছবি তোলা নয়, বরং ফেইস ডিটেক্ট করতে পারবে। ফলে কোনো অপরাধীকে খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। এছাড়া কোথাও পানি জমলে, আবর্জনা জমে থাকলে তাও আমরা এই ক্যামেরার মাধ্যমে জানতে পারব।”

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু, ডিজিটাল এলইডি লাইট স্থাপনসহ আরও কিছু পরিকল্পনার কথাও জানান মেয়র।

তবে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের অভাবে অনেক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মেয়র বলেন, রাজস্ব থেকে ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আয় হয়। এর মধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে আয় হয় ১৫০ কোটি টাকা। তবে এক রিট আবেদনের কারণে সেটাও বন্ধ আছে। রাজস্ব আয় বাড়াতে আরও নতুন পথ বের করা প্রয়োজন। 

বিগত দুই বছরের সিটি করপোরেশনের কাজের একটি তালিকাও প্রকাশ করে ডিএসসিসি।

সম্পাদিত/বাস্তবায়িত কার্যক্রম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে গত দুই বছরে ৩৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হল-

২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নীচে যাত্রাবাড়ী থেকে জয়কালী মন্দির পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাতের উন্নয়ন।

৫১ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধান সড়কগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোল্ড রি-সাইক্লিং প্ল্যান্ট ও ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ।

২৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ডিএসসিসির ৫৫ ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের (কামরাঙ্গীরচর এলাকা) ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণসহ রাস্তা পুনঃনির্মাণ।

২১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী ও দয়াগঞ্জ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাতের উন্নয়ন।

২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে যানবাহন, যন্ত্রপাতি আধুনিকীকরণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ।

১৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা আরবান ইনফ্রাস্ট্রাক্চার ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট।

সরকার ও নিজস্ব অর্থায়নে কার্যক্রম

সরকার ও নগর কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়নের পথে থাকা কয়েকটি প্রকল্পের বর্ণনাও দেওয়া হয় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।

২১৫ দশমিক ৭২ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন; ২৩৯ দশমিক ১৯ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ/উন্নয়ন; রাস্তায় ১৮ হাজার ৬৮৭টি এলইডি বাতি স্থাপন; ৮টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ; ধলপুর, লালবাগ ও গণকটুলিতে ৬টি সুইপার কলোনি নির্মাণ, কামরাঙ্গীরচর, ইসলামবাগ ও ফরাশগঞ্জে তিনটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ।

মিরনজল্লা সুইপার কলোনিতে একটি মন্দির নির্মাণ এবং পোস্তগোলায় শ্মশানঘাট উন্নয়ন/আধুনিকায়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও উল্লেখ করে সিটি করপোরেশন।