আলো জ্বেলে জুলহাজ-তনয়কে স্মরণ

সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যাকাণ্ডের বছরপূর্তিতে আলো জ্বেলে দুই সহযোদ্ধাকে স্মরণ করলেন  ফ্রি থিংকার্স মুভমেন্ট বিডি’র একজন সদস্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 04:43 PM
Updated : 25 April 2017, 04:46 PM

‘সমপ্রেমী অ্যাক্টিভিস্ট জুলহাস ও তনয় হত্যার এক বছর/ রাষ্ট্র ও প্রশাসনের নেই কোনো খবর!??’ লেখা ব্যানার নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বসেন সংগঠনটির সদস্য সাজ্জাত সাজু।

বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তিনি। পরে সেখানে মোমবাতি জ্বালিয়ে যৌন সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবি জানান সাজু।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বছর পেরিয়ে গেলেও জুলহাজ ও তনয় হত্যা তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। তিনি সমকামীদের নিয়ে কাজ করতেন। একই সঙ্গে রূপবান নামে ম্যাগাজিন লিখতেন।

“কিন্তু তার কলাবাগানের বাসায় উগ্রবাদী যুবক ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করে জুলহাসকে এবং তার বন্ধু তনয়কেও। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো অগ্রগতি নেই।”

গত বছর ২৫ এপ্রিল বিকালে পার্সেল দেওয়ার কথা বলে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় জুলহাজ মান্নানের বাসায় ঢুকে পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক তাকে এবং তার বন্ধু তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে।

উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের কর্মী জুলহাজ (৩৫) সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন। তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় (২৬) ছিলেন লোকনাট্য দলের কর্মী।

জুলহাজ-তনয়ের আগে পরে ঢাকায় বছর দুয়েকের মধ্যে লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নীলয় ও প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

অভিজিৎসহ অন্যদের হত্যাকাণ্ডের বছরপূর্তিতে অনেকেই বিচারের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়ালেও এদিন ব্যানার-পোস্টার সাঁটিয়ে একাই ছিলেন সাজু। 

তিনি বলেন, “এই সব স্পর্শকাতর ইস্যুতে কেউ প্রতিবাদ করতে আসে না, ভয় থাকে। একাই আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

যৌন সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ থেকে ৩৭৭ ধারা বাতিল করতে হবে। এই আইন সেই রানী ভিক্টোরিয়ার শাসন আমলের। এই আইনে নারী-পুরুষ যৌন সম্পর্কের কথা উল্লেখ রয়েছে, এতে সমকামী অধিকার বিচ্যুত হয়। তাই অবিলম্বে ৩৭৭ ধারা বাতিল করতে হবে।