লিবিয়ায় জিম্মি করে দেশে এসে মুক্তিপণ তুলতে গিয়ে ধরা

লিবিয়ায় অপহৃত কয়েকজন বাংলাদেশির পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের চেষ্টাকালে তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যাদের মধ্যে লিবিয়াপ্রবাসী একজন এই চক্রের হোতা বলে সিআইডি জানিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 01:50 PM
Updated : 25 April 2017, 01:50 PM

তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মুক্তিপণের অর্ধ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার লিবিয়া প্রবাসী মো. মুজিবর জমাদ্দার (৪৫), তার স্ত্রী নূরজাহান (৩৯) ও জামাতা হান্নান মিয়াকে (৩২) গত শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। মুজিবর ও হান্নান রিমান্ডে আছেন। নূরজাহানকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের অপহরণ এবং দেশে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন।

মোল্যা নজরুল বলেন, মুজিবর এবং তার ছেলে-ভাইসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন লিবিয়ায় থাকেন। গত অক্টোবরে দেশে আসেন মুজিবর, শিগগিরই তার আবার সেদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।  

“২ এপ্রিল এই তিনজনের নামে শিবচর থানায় ব্র্যাক ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকে তিনটি হিসাব খোলা হয়। একদিন পরেই সিলেট, ঠাকুরগাঁও, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক লাখ টাকা ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে জমা হয়।

“ওই তিন অ্যাকাউন্টে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা জমা হয়, যা মুক্তিপণ হিসেবে জমা দেন অপহৃতদের স্বজনরা।”

এই চক্রে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত জানিয়ে এসপি নজরুল বলেন, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গত বছর অক্টোবরে লিবিয়া পাচারকালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ৩৯ জনকে আটক করে র‌্যাব।

সে সময় র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, একদিন থেকে এক মাস মেয়াদী ও মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া ভ্রমণ ভিসায় তাদের লিবিয়া নেওয়া হচ্ছিল। এদের প্রায় সবাই দরিদ্র পরিবারের। বেশিরভাগের কাছ থেকেই অল্প কিছু টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা লিবিয়া যাওয়ার পর শোধ করার কথা। লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার চুক্তি করেছিলেন কয়েকজন।

এভাবে পাচার হওয়া কয়েকজনকে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্ধার করার কথা জানিয়ে সে সময় র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বলেছিলেন, “লিবিয়া পৌঁছানোর পরই এদের উপর শুরু হয় টাকার জন্য নির্যাতন।

“ফোন করে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে টাকা চাওয়া হয়। টাকা পরিশোধের পর আর পাচার হওয়াদের ইতালি নেওয়া হয় না। তাদের লিবিয়ার কোনো মরুভূমিতে ফেলে চলে যায় পাচারকারীরা।”