চিঠিতে রমেলের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার কমিশনের কো-চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল ও এলসা স্টামাতোপৌলৌ স্বাক্ষরিত চিঠিতে সেনাবাহিনীর হাতে আটকের পর পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রমেলের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
রমেলের মৃত্যুতে পাহাড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এই মৃত্যুর প্রতিবাদে রোববার রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও নৌ-পথ অবরোধ পালিত হয়। এছাড়া এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।
রমেল চাকমা ইউপিডিএফ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) নানিয়ারচর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
গত ৫ এপ্রিল জেলার নানিয়ারচর উপজেলা সদর থেকে তাকে আটক করে সেনাবাহিনী। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করানো হয়। সেখানে ১৯ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। তবে আটকের পর নিজেদের হেফাজতে নির্যাতনে রমেলের মৃত্যুর অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের চিঠিতে বলা হয়, “অভিযোগ রয়েছে যে, আটকের পরে তার ওপর নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।”
নির্যাতনে অসুস্থ রমেলকে প্রথম স্থানীয় পুলিশ এবং উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করতে চায়নি বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।
“নির্যাতনের পরে অসুস্থ রমেল চাকমাকে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করতে চাইলে পুলিশও তাকে গ্রহণ করেনি। এমনকি স্থানীয় উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাকে সেখানে ভর্তি না করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রেরণের পরামর্শ প্রদান করে।”
রমেল চাকমাকে আটকের পর নির্যাতন এবং তার মৃত্যু ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
চিঠিতে বলা হয়, “অধিকতর উদ্বেগের বিষয় এই যে, আটকাবস্থায় রমেল চাকমার ওপর নির্যাতন ও পরবর্তীতে মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিজেদের দায় অস্বীকার করে একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রে বিনাবিচারে একদিকে এভাবে একজন শিক্ষার্থীর জীবন অকালে কেড়ে নেয়া ও অন্যদিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উল্লেখিত আচরণ কোনভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
“তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন রমেল চাকমার হত্যার তদন্তের জন্য অনতিবিলম্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ বিচারিক তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানায় এবং এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করারও আহ্বান জানায়।”
পাশাপাশি রমেল চাকমার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতেরও আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।