জীবাণুসহ মাছ-পোনা আমদানিতে কারাদণ্ডের আইন হচ্ছে

আমদানি করা মাছ, পোনা বা রেনুর মাধ্যমে রোগজীবাণু ও ক্ষতিকর উপাদান প্রবেশ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত মাছ আমদানি ঠেকাতে নতুন একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2017, 10:51 AM
Updated : 24 April 2017, 10:51 AM

এই আইনের মাধ্যমে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো মৎস্য, মৎস্যপণ্য, উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্য আমদানি করতে পারবে না।

এই আইন অমান্য করলে দোষীরা অনূর্ধ্ব দুই বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ‘মৎস্য সঙ্গনিরোধ আইন ২০১৭’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন হওয়ার কথা জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মাছ জাতীয় জিনিস এখন আমরা নিজেরা নিজেরা নিয়ে আসছি। কিন্তু ভবিষ্যতে আনতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।

“আমদানির অনুমতিপত্র এবং মৎস্য বিষয়ক সনদপত্র গ্রহণ, সংশোধন, বাতিলের এখতিয়ার দেওয়া আছে কর্তৃপক্ষকে। এগুলো কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করবে।” 

সঙ্গনিরোধের ব্যাখ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মৎস্য রোগের প্রাদুর্ভাব বা বিস্তার রোধে আমদানির উদ্দেশ্যে আনা মৎস্য, মৎস্যপণ্য, উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদি পৃথকীকরণ আইসোলেশন এবং পরীক্ষার জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থান বা আঙ্গিনায় মৎস্য সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা কর্তৃক নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অন্তরীণ বা পর্যবেক্ষণে রাখা।

বর্তমানে কৃষি সংক্রান্ত পণ্য বা উপাদান আনার বিষয়ে ‘কোয়ারেন্টাইন’ পদ্ধতি জল, স্থল এবং বিমানবন্দরে রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বিভিন্ন দেশ থেকে যে মৎস্য বা মৎস্য জাতীয় পোনা, রেণু আমদানি করা হয়, সেগুলোতে যেন রোগ জীবাণু বা ক্ষতিকারক কিছু না থাকে তার জন্য আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই আইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় বলে জানান তিনি।

“আমাদের দেশে যে সকল মৎস্য জাতীয় প্রাণি আমদানি করা নিষিদ্ধ সেগুলো যেন ভুলক্রমে না আসে। যেমন পিরানহা, আফ্রিকান মাগুর আমাদের আইনে নিষিদ্ধ। এগুলোর উৎপাদন, প্রজনন, বিপণন, পরিবহন সবই নিষিদ্ধ। কিন্তু ভুলক্রমে যদি চলে আসে তাহলে এই আইন প্রোটেক্ট করবে।”

প্রস্তাবিত আইনের অপরাধগুলোতে পুলিশ সরাসরি গ্রেপ্তার করতে পারবে না। আবার আদালতে গেলে তা জামিনযোগ্য হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। 

আইনের আওতায় প্রশাসনিক আদেশের বিরুদ্ধে কেউ আপিল করতে চাইলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদেশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে।

মৎস্য নিরোধ কর্মকর্তা কর্তৃক আদেশ হয়ে থাকলে মহাপরিচালকের কাছে এবং মহাপরিচালক কোনো আদেশ দিলে সরকারের কাছে আপিল করতে পারবে। 

এই আইনের আওতায় একটি কর্তৃপক্ষ থাকবে।

শফিউল বলেন, “একটি কর্তৃপক্ষ থাকবে, আলাদা কর্তৃপক্ষ না। মৎস্য অধিদপ্তরের আইনের আওতায় কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে এবং মহাপরিচালক হবেন কর্তৃপক্ষের প্রধান।

“এ আইনের আওতায় মৎস্য, মৎস্যপণ্য, উপকারী জীবাণুর আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ জনস্বার্থে সরকার সময়ে সময়ে করতে পারবে।” 

মৎস্য সঙ্গনিরোধ বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ করার জন্য একটি কমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে এই কমিটি গঠন করতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।