লাকী আখান্দের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভার শোক

মুক্তিযোদ্ধা ও জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী লাকী আখান্দের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2017, 10:17 AM
Updated : 24 April 2017, 10:17 AM

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শিল্পী গত শুক্রবার মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, “জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখান্দের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা।

“মন্ত্রিসভা শোক প্রকাশ করে তার রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে।” 

লাকী আখান্দের জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। শৈশব পেরোতেই তিনি সুযোগ পেয়ে যান রেকর্ড লেভেল প্রতিষ্ঠান এইচএমভিতে।

আশির দশকের শুরুতে লাকী আর ভাই হ্যাপী আখান্দ জুটির বেশ কিছু গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। সে সময় লাকী মূলত ছিলেন সুরকার ও গীতিকার। আর সেই গানের শিল্পী ছিলেন হ্যাপী। সে সময়ের একটি টিভি নাটকে ‘এই নীল মনিহার’ গানটি দারুণ সাড়া ফেলে।

১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে বাজারে আসে লাকীর প্রথম একক অ্যালবাম। ‘এই নীল মণিহার’ ছাড়াও ওই অ্যালবামের ‘আমায় ডেকো না’,‘রীতিনীতি জানি না’, ‘মামনিয়া’, ‘আগে যদি জানতাম’ গানগুলো শ্রোতাদের মাঝে সাড়া ফেলে।

১৯৮৭ সালে হ্যাপীর মৃত্যুর পরপর সঙ্গীতাঙ্গন থেকে অনেকটাই স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান এই গুণী শিল্পী। দীর্ঘ নীরবতার পর ১৯৯৮-এ ‘পরিচয় কবে হবে’ ও ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ নামে তার দুটি অ্যালবাম আসে।

লাকী আখান্দ সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মাত্র ১৫ বছর বয়সে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং স্বাধীণ বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগদান করেন।” 

কিংবদন্তি এই সঙ্গীত শিল্পীর সুরারোপিত গান মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করত উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরাও শুনেছি ওই সময়ে। 

“তার বিশেষ গানের মধ্যে রয়েছে, স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে, এই নীল মণিহার, আবার এলো যে সন্ধ্যা, কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে, আমায় ডেক না, আগে যদি জানতাম, মামনিয়া, লিখতে পারি না কোনো গান, রীতিনীতি জানি না ইত্যাদি। এগুলো খুবই জনপ্রিয় গান, ওনার লেখা এবং সুর করা গান।”

তিনি দেড় হাজারের বেশি গানে সুরারোপ করেন এবং বাংলা গানে এক নতুন ধারার সূচনা করেন উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকির ‘ঘুড্ডি’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনায় বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।

 “লাকী আখান্দের মৃত্যুতে দেশের সঙ্গীতাঙ্গনে অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হল,” বলেন তিনি।