গ্যাস নেই, দুর্ভোগে মিরপুরবাসী

মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজে ঘোষণার বেশি সময় গ্যাস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর মিরপুরবাসী; ছুটির দিনে খাবারের জন্য হোটেলে ভিড় জমাতে দেখা গেছে তাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2017, 10:46 AM
Updated : 21 April 2017, 10:46 AM

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গ্যাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল, তবে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত গ্যাসে আসেনি বেশিরভাগ এলাকায়।

তিতাস গ্যাসের মিরপুর জোনের কর্মকর্তা বাহারুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেট্রোরেলের কাজের কারণে সকাল ১০টা পর্যন্ত গ্যাস থাকবে না- এমন ঘোষণা ছিল। তবে কাজ শেষ করতে হয়তো কিছুটা সময় বেশি লেগেছে।”

কখন গ্যাস আসতে পারে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এইচএম ইসলাম বলেছেন, সব এলাকায় গ্যাস পৌঁছাতে রাত হয়ে যেতে পারে।

মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরপুর-৭ নম্বর এলাকা ছাড়া আর কোথাও বিকাল পর্যন্ত গ্যাস আসেনি। এই পরিস্থিতিতে ছুটির দিনের দুপুরে বাসায় রান্না করতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক মিরপুরের বাসিন্দা কাজী নাফিয়া রহমান জানান, জুমার নামাজের পর স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে ব্যাপক ভিড় দেখেছেন তিনি। রেস্তোরাঁয় ভিড় থাকায় অনেকে আবার ছুটছেন ফাস্ট ফুডের দোকানে।

নাফিয়ার প্রতিবেশী শামসুন্নাহার মালা খাবার কিনতে ব্যর্থ হয়ে স্টোভ কিনে বাসায় এসেছেন।

মালা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কতক্ষণ আর সহ্য করব? বাসায় তো রান্না করতেই হবে। তাই স্টোভ কিনে ফেললাম।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক রিফাত রহমান থাকেন ইব্রাহীমপুর এলাকায়। তার বাসাতেও গ্যাস নেই সকাল থেকে। তিনিও রেস্তোরাঁগুলোতে ভিড় দেখেছেন।  

মিরপুরের উত্তর কাফরুলের বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, গ্যাস না থাকায় রান্না হয়নি তার বাসায়। বাইরে থেকে খাবার কিনেই দুপুরে চালাতে হয়েছে।

ওই এলাকার কবির হোসেন বলেন, “শুক্রবার সবাই বাসায় থাকে, এ দিন গ্যাস না থাকলে চলে কীভাবে? হোটেল থেকে খাবার আনিয়ে খাচ্ছি।”

আগারগাঁও তালতলার বাসিন্দা চমক দেওয়ান জানান, তার বাসার চুলা সকালে টিমটিম করে জ্বললেও পরে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।

আর কাজীপাড়ার বাসিন্দা হাসানুজ্জামান রুদ্র বলেন, টিভির টিকারে ঘোষণা দেখলেও তিতাস কর্তৃপক্ষ তার এলাকায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে আগে থেকে সতর্ক করেনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

পূর্ব কাজীপাড়ার বাসিন্দা রুবেল পারভেজ বলেন, “ওরা যখন মাইকিং করে তখন যে সময়ের কথা বলে সেটা মানে না। কখনও কখনও ঘোষণা ছাড়াই অফ করে দেয়।”

মিরপুর ৬০ ফুটের ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা সুকন্যা আমীর বলেন, “কাল রাত ১০টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত গ্যাস না থাকার কথা বলা হয়েছিল মাইকে। কিন্তু ৩টা পেরিয়ে গেল, এখন পর্যন্ত বাসায় গ্যাস আসে নাই।”

মিরপুর-৭ এ এলাকার বাসিন্দা লাবণ্য জানান, তার বাসায় বেলা ৩টার দিকে গ্যাস আসতে শুরু করেছে।

তবে ওই সময় পর্যন্ত গ্যাস না পাওয়ার কথা বলেছেন মিরপুরের অন্যান্য এলাকার বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা, অভিনেত্রী মৌসুমী নাগ, সাংবাদিক খাদিজা ফাল্গুনী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাজীব আহমেদ, কেয়া রহমান, প্রিয়াঙ্কা দাস পিউসহ আরও অনেকে।

খাদিজা ফাল্গুনী বলেন, “গ্যাস কখন আসবে জানি না। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দেখলাম মানুষ দোকানে ছুটছে খাবার কিনতে।

তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এইচএম ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মেট্রোরেলের পাইপলাইনের কাজ চূড়ান্ত করার জন্য মিরপুর এলাকার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।

“আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, শুক্রবার দুপুরের মধ্যে গ্যাস আসবে। কিন্তু একটু বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। আশা করছি, যেসব এলাকায় গ্যাস আসেনি, সেখানে আজ রাতের মধ্যে চলে আসবে।”