কারওয়ানবাজারে বিক্ষোভে চার গার্মেন্টের কয়েকশ শ্রমিক

ন্যায্য পাওনার দাবি এবং নিয়ম বহির্ভূত চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে গাজীপুর ও আশুলিয়ার চারটি পোশাক কারখানার কয়েকশ শ্রমিক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2017, 11:00 AM
Updated : 20 April 2017, 11:00 AM

বৃহস্পতিবার সকালে পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন ও ‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর’ ঘিরে এসব বিক্ষোভ হয়।

শ্রমিক অধিকার সংগঠন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতৃত্বে আশুলিয়ার জামগড়ার শেড ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, পিঅ্যান্ডও এটার্স লিমিটেড ও শেড ফ্যাশন লিমিটেডের কয়েকশ শ্রমিক ঘেরাও করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

সংগঠনটির নেতারা জানান, শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি, টিফিনবিল, ছুটির টাকা, মাতৃত্বকালীন ছুটির টাকা ও প্রতিমাসের প্রথম সাত কর্মদিবসের মধ্যে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন এক সপ্তাহ ধরে।

এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ঘেরাও করেন তারা। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র শ্রমিকদের এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভে শ্রমিকরা

সংগঠনটির নেতা মঞ্জুর মঈন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চলতি মাসের শুরু থেকে কারখানাগুলোর কাজ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সে কারণে শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। বেতন বকেয়া রেখে কারখানার মালিকানা পরিবর্তন করা হচ্ছে বলেও শ্রমিকরা জানতে পেরেছেন।

শ্রমিক বিক্ষোভে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরি সভাপতি কাজী রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, দপ্তর সম্পাদক এমএ শাহীন বক্তব্য রাখেন। পরে শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে একটি স্মারকলিপি দেন।

পরে অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক মো. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া আন্দোলনরত শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, “দেশ-বিদেশি যেকোনো কারখানা নিয়ম ভঙ্গ করলে আমরা ব্যবস্থার নেব। শ্রমিকের টাকা বাকি রেখে কেউ যেতে পারবে না। এমনকি মালিকানা হস্তান্তরেরও সুযোগ নেই।”

বিজিএমইএ ভবন ঘেরাও

এদিকে গাজীপুরের জয়দেবপুরে কোরিয়ান মালিকানাধীন সাচ্ছন কোম্পানি বিডি নামের একটি কারখানায় ৬৮৭ জন শ্রমিকের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ ও ন্যায্য পাওনার দাবিতে বিজিএমইএ ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ শ্রমিক।

বিজিএমইএ ভবনের সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এই বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেয়।

সংগঠনটির নেতা খাইরুল মামুন মিন্টু জানান, চলতি বছরের শুরু থেকে কয়েক ধাপে এই কারখানার ৬৮৭ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ। তাদের ওপর হামলা ও মামলা দেয় তারা। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী এসব শ্রমিকের অধিকাংশের বেতনভাতাই তারা পরিশোধ করেনি।

এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএ সভাপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিজিএমইএর ক্রাইসিস ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা শ্রমিকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাচ্ছন কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে ডেকেছেন। তারা আসার পর শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা করে পরিস্থিতির সমাধান করবেন।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, “বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ ফেডারেশনের তিনজন ও শ্রমিকদের তিনজন প্রতিনিধি নিয়ে বিকালে মালিকপক্ষের সঙ্গে বসবে। আলোচনায় একটা সমাধান হবে বলে আশা করছি।”