ইংরেজদের দুষ্টুবুদ্ধি চর্চাকারী বামপন্থিরা কওমি সনদের বিরোধী: মাসঊদ

বাংলাদেশে বামপন্থি অনেক রাজনীতিক ‘ইংরেজদের দুষ্টুবুদ্ধির’ চর্চায় রয়েছে মন্তব্য করে কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতির বিষয়ে বিভ্ন্নি মহলের বিরোধিতার জন্য তাদের দায়ী করেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2017, 10:53 AM
Updated : 20 April 2017, 12:47 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার কর্মী সম্মেলনে একথা বলেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মাসঊদ বলেন, “ইংরেজরা আলেমদের জনবিচ্ছিন্ন করে উপমহাদেশ শাসনের পথ প্রস্তুত করেছিল। এ দেশের উদার, অসাম্প্রদায়িক আলেমদের একশ্রেণির বামপন্থিরা জনবিচ্ছিন্ন করে রাখতে চায়।

“তারা ১১ এপ্রিলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষশক্তির সঙ্গে আলেমদের সংযুক্ত হওয়াকে সহ্য করতে পারছে না। কারণ স্বাধীনতার স্বপক্ষশক্তির সঙ্গে ব্যবধান ঘুচে যাওয়ায় তারা নিজেদের লাভক্ষতির হিসাব নিকাশ কষছেন। এসময়েও ইংরেজদের দুষ্টুবুদ্ধির চর্চা করে এক ধরনের বামপন্থি ও নামধারী সুন্নী-জামাত কওমি সনদের বিরোধিতা করছে।”

গত ১১ এপ্রিল গণভবনে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর দুদিনের মধ্যে স্বীকৃতির গেজেটও জারি করে সরকার।

ওইদিনের বৈঠক থেকে সুপ্রিম কোর্টে রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে স্থাপিত ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারী ওলামাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে এটি সরাতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে শোলাকিয়ার ইমাম ফরীদ উদ্দীন মাসঊদই জাতীয় ঈদগাহের পাশে স্থাপিত ভাস্কর্যটিকে ‘মূর্তি’ আখ্যায়িত করে তা সরানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ভাস্কর্য সরানোসহ হেফাজতে ইসলামের এসব দাবি দেশের অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি জঙ্গিবাদে উৎসাহ যোগাবে বলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতসহ জাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন ও সিপিবিসহ বিভিন্ন মহলের আশঙ্কার মধ্যে হাই কোর্টের সামনে ‘মূর্তিস্থাপনকে’ সাম্প্রদায়িকতা বলেন আখ্যায়িত করে মাওলানা মাসঊদ।

“একটা সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে চাপিয়ে দেওয়াটাই সাম্প্রদায়িকতা। যারা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প উসকে দিতে চায়, তারা দেশের মঙ্গল চায় না।”

শিল্পের দিক থেকেও ‘গ্রিকমূর্তিটি’ বিভ্রম সৃষ্টি করেছে দাবি করে তিনি বলেন, “গ্রিকমূর্তি তৈরিতে শিল্পের দিক বিবেচনায়ও শিল্পমান উন্নীত নয়। গ্রিকের এক নারীর গায়ে শাড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিল্পবোদ্ধাদের প্রতিবাদ করা দরকার ছিল।

“আজকে মোনালিসার সেই ছবি কিংবা পিকাসোর কোনো ছবির চরিত্র বদল করলে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠবে। অথচ গ্রিকমূর্তির ক্ষেত্রে কোনো সমালোচনাই হয়নি।”

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিষয়ে জাপান সরকার, ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জমিয়তুল উলামা জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে বলে জানান ফরিদ উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মাওলানা শামসুল হুদা খান, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা দেলোয়ার হোসইন সাইফী, মাওলানা হোসাইন আহমদ, কারী শামসুল হক, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা আইয়ুব আনসারী, মাওলানা সাঈদ নিজামী, মাওলানা তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা সদরুদ্দীনমাকনুন, মাওলানা মুঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।