বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই মতিয়ার প্রভাষক পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে নিয়োগ পান। সম্প্রতি তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ জলিল বলছেন, মতিয়ারের ওই কাণ্ডের কথা তাদের জানা ছিল না। আর মতিয়ার রহমানের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় মতিয়ার ছাত্রলীগের সঙ্গ যুক্ত ছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমের তথ্য। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।
২০১৩ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের নিয়েগ পাওয়ার পর ওই বছরই তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদে যোগ দেন। পরের বছর জগন্নাথের চাকরিতে থাকা অবস্থায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অস্ত্র হাতে মতিয়ারের ছবি সংবাদমাধ্যমে এলে তোলপাড় শুরু হয়।
সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মফিজ লেকের কাছে ‘পিস্তল চালানোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময়’ তোলা হয় ওই ছবি।
সেখানে পিস্তল তাক করে দাঁড়ানো মতিয়ারের পাশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও বর্তমান বিসিএস ক্যাডার (অর্থনীতি) আজিজুল হক মামুনকে দেখা যায়, যিনি এক সময় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন।
ওই ছবি সংবাদমাধ্যমে এলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমানকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সজিবকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
সে সময় দুই শিক্ষকের বিচারের দাবিও তোলা হয়েছিল বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। তবে পরে বিষয়টি আড়ালে চলে যায়।
মতিয়ার রহমান অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে সে সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তার হাতে ছিল খেলনা পিস্তল। বাচ্চারা ওই ধরনের পিস্তাল নিয়ে খেলাধুলা করে।
তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বৃহস্পতিবার সকালে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে রাতে মতিয়ার রহমানের নামে ফ্যাক্সে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ইতোপূর্বে পরিসংখ্যান বিভাগের স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি, নারী নির্যাতনের কারণে ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্ত এবং পরীক্ষার ফলাফলে জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অশিক্ষকসুলভ কর্মকাণ্ডে শিক্ষকদের একটি গ্রুপ সক্রিয় ছিল। শিক্ষক হিসাবে এই বিভাগের যোগদান করার পর থেকে আমি প্রগতিশীল শিক্ষকদের সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যানকে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজে সহযোগিতা করে আসছি।”
এ কারণে একটি ‘কুচক্রী মহল’ তার ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য সংবাদ ‘প্রকাশ করাচ্ছে’ বলে সেখানে অভিযোগ করা হলেও অস্ত্রহাতে ছবির বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
মতিয়ারের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ জলিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিয়োগ পেয়েছে দশ মাস হতে যাচ্ছে। এতোদিন তো আমরা কিছু জানতাম না। নিয়োগের সময় বিষয়টি জানা থাকলে বিভাগের বাছাই কমিটি বিষয়টি দেখত।”
এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি দেখবে জানিয়ে এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।