দাওরায়ে হাদিসের সনদের মর্যাদা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমান বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর গত বৃহস্পতিবার তার প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তার দুদিন পর রোববার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় ‘দাওরায়ে হাদিস সনদের মান বাস্তবায়ন কমিটি’ প্রথম বৈঠকে বসে, যে কমিটি সরকারি প্রজ্ঞাপনেই করে দেওয়া হয়েছিল।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার পরিচালক শাহ আহমদ শফী। কমিটির ৩২ সদস্যের মধ্যে ৩০ জন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফীর প্রেস সচিব মুনির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও এবং আরবি) এর সমমান দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
সভায় বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশসহ (বেফাক) ছয়টি কওমি বোর্ডের অধীন মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষার্থীরা দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারা এবং অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ নামে সর্বোচ্চ সংস্থার আওতায় দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা গ্রহণ ও সনদ বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”
অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ১৫ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বেফাক থেকে ছয় এবং কওমি মাদ্রাসার বাকি পাঁচ বোর্ডের একজন করে ১১ জনকে নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটি গঠন হয়। গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মাওলানা শামসুল হককে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নির্বাচিত করা হয়।
কমিটি তাদের কার্যক্রম চালাতে সরকার থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা বা সুবিধা না নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সরকারি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা ছয়টি বোর্ডে নিবন্ধিত দাওরায়ে হাদিসের মাদ্রাসাগুলো ‘আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এ নিবন্ধিত বলে গণ্য হবে।
এই সংক্রান্ত খবর-
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ
“পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত গ্রিক মূর্তি অপসারণের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি প্রদান, ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনেক ইতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সেদিনের বক্তব্য অত্যন্ত মূল্যবান ও প্রশংসনীয় ছিল।”
কওমির সনদের স্বীকৃতি এবং সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের ঘোষণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
এর মধ্য দিয়ে গণজাগরণবিরোধী হেফাজতের কাছে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলটির নতি শিকার হয়েছে বলে যেমন মন্তব্য এসেছে, তেমনি দলটির আদর্শচ্যুতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলেও প্রতিক্রিয়া এসেছে।