বৃহস্পতিবারই মৌলভীবাজারে এক জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে ‘সাত থেকে আটজন’ নিহতের পর সন্ধ্যায় ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
সিলেটে একটি জঙ্গি আস্তানায় পাঁচদিনের সেনা অভিযানে চারজনের নিহতের পর একদিন না যেতেই পাশের জেলায় এই অভিযান হল। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে এখনও মৌলভীবাজারে একটি এবং কুমিল্লা শহরে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
রাজধানীর রাজউক এভিনিউয়ে বিডিবিএলের সম্মেলন কক্ষে ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গি তৎপরতা হঠাৎ করেই আসেনি, গোয়েন্দারা কাজ করছে বলে, দেশের মানুষ তথ্য দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছেন বলেই সমস্ত জঙ্গিদের আস্তানা আমরা খুঁজে পাচ্ছি। আস্তানা থেকে তারা যেন বের হতে না পারে, সেখানেই তাদের আমরা মোকাবেলা করছি।”
মৌলভীবাজারে জঙ্গি দমন অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, “সেখানে দুই জায়গাতে ধরেছিলাম, এক জায়গার অপারেশন শেষ হয়েছে, আরেক জায়গায় শুরু হচ্ছে। কুমিল্লার এক জায়গায় আছে। এগুলি বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আমাদের এখানে আছে। আমরা কোনো ধরনের ঝুঁকি নিচ্ছি না। আমরা যেখানে যেটাকে পাচ্ছি, সেখানেই মোকাবেলা করছি।”
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলা করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“এই সরকারের প্রথম ৯১ দিন আমরা অগ্নিসন্ত্রাস ফেইস করেছি। তারপর দেখলাম টার্গেট কিলিং, তারপর বিদেশিদের হত্যা, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের হত্যার দৃশ্য দেখতে হয়েছে। এগুলোর মূল উদ্দেশ্যটা ছিল- বঙ্গবন্ধুকন্যা যে দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেটাকে বিধ্বস্ত করা।”
এর পিছনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “আজকে কী হচ্ছে? আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ; এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে বাংলাদেশ, তারপরও মানুষ খুন হচ্ছে।
“কিছুক্ষণ আগে মৌলভীবাজার... যারা মানুষ হত্যা করে, এরা কারা? আজকে জানতে হবে, বুঝতে হবে। মানুষ হত্যার কথা তো কোনো ধর্মেই নেই। আর ইসলাম ধর্ম তো শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম। সেই ধর্মে তো স্পষ্ট নিষেধ আছে, তারপরও কেন মানুষ হত্যা করা হয়? কেন এই ষড়যন্ত্র?”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা জঙ্গি কন্ট্রোলে রেখেছি, আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বিদ্যমান রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যে ডাক দিয়েছেন, সেই ডাকে দেশের পেশাজীবী, শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক, কৃষক-শ্রমিক, মাদ্রাসা শিক্ষক, মসজিদের ঈমামসহ সবাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
“সবাই জঙ্গিদের ধিক্কার দিচ্ছেন, ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। সেই জন্যই জঙ্গিদের বাবা কিংবা মা তাদের ছেলেটিকে আমাদের কাছে ধরিয়ে দিচ্ছেন, সোপর্দ করছেন।”
১৭ মার্চ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বিডিবিএল শাখা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন আলী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বীর বিক্রম মাহবুবু উদ্দিন আহমেদ, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিদার আলী প্রমুখ।