ঢাকায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্তিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগে এই সমাবেশ হয়।
সমাবেশে ব্লগার-লেখক বাকী বিল্লাহ বলেন, “মাত্র কিছুদিন আগে আমরা যারা মুক্তমনাদের হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছি, সবাই অনেক বার বলেছি, সরকার বিশ্বাস করেনি। আজকে এখানে ওখানে জঙ্গি আস্তানা কেন? তখন প্রধানমন্ত্রী কথা শোনেনি, বরং তিনি বলেছেন- লেখালেখির কারণে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটছে।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর আন্দোলনকারীদের ‘নাস্তিক’ আখ্যায়িত করে মাঠে নামে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারের ইসলামী সংগঠনগুলো।
এরপর একের পর এক ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট খুন হতে থাকেন। তার ধারাবাহ্কিতায় ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় খুন হন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা-বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়।
এর কয়েক মাসের মধ্যে হত্যা করা হয় আরও তিন ব্লগার-অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ ও নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নীলয়কে। ওই শেষদিকে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে।
২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় নিজের বাসা থেকে বের হওয়ার পর রাস্তায় খুন হন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু। তাকে কুপিয়ে পালানোর সময় দুজনকে ধরে পুলিশে দেয় জনতা।
এরপর দুই বছরেও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বাকী বিল্লাহ বলেন, “বাবুর হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই খুনিকে হাতেনাতে আটক করার পরও সেই মামলার বিচারে কোন অগ্রগ্রতি নেই, এই বিচার কি হবে?”
সমাজকর্মী জাকিয়া শিশির বলেন, “সাম্প্রদায়িকতার নামে মানুষ খুন হবে, সেখানে রাষ্ট্র নির্বিকার থাকতে পারে না। মুক্তমনারা ভুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে লিখত মানুষকে সচেতন করতে। কিন্তু রাজপথে তাদের খুন করা হয়েছে।
“সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বলেছেন, তাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের লেখার কারণে। সে সময় তাদের লেখা দেখার কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে করে খুনিদের প্রশ্রয় দিয়েছে, উৎসাহিত করা হয়েছে।”
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান হাওড় বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ইফতেখার আহমেদ বাবু।