ট্যানারি মালিকদের একটি আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়।
পরিবেশের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫৪ ট্যানারির বকেয়া ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা পরিশোধের আদেশ স্থগিত এবং প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার রায় পুনর্বিবেচনায় এই আবেদন করেছিলেন ট্যানারি মালিকরা।
আপিল বিভাগ আদেশে বলেছে, আগামী ৬ এপ্রিলের মধ্যে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি ‘ক্লোজ ডাউন’ করতে হবে। এরপর ক্ষতিপূরণের বকেয়া ও জরিমানা নিয়ে আবেদন আদালত শুনবে। বিষয়টি আগাসী ৯ এপ্রিল আবার শুনানির জন্য আসবে।
এর আগে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ হাজারীবাগের সব ট্যানারি অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। ট্যানারি মালিকরা কোরবানির ঈদ পর্যন্ত হাজারীবাগে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি চাইলেও হাই কোর্ট বুধবার তা নাকচ করে দেয়।
বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে ট্যানারি মালিকদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
মনজিল মোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন, হাজারীবাগের ট্যানারি অপসারণ সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবেশের ক্ষতি হিসেবে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে দিতে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা ট্যানারি মালিকরা না দেওয়ায় তারা একটি আবেদন করেছিলেন।
হাই কোর্ট বকেয়া ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আপিল করে। এছাড়া পরিবেশের ক্ষতি হিসেবে ট্যানারি কারখানাগুলোকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার আদেশের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চাওয়া হয়েছিল।
আদালত তখন বলে, হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানার বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিলেও অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের তথ্য আদালতের কাছে আছে।
আদালত আরও বলে, হাজারীবাগ থেকে কারখানাগুলো যদি ৬ এপ্রিলের মধ্যে নিজেরা সরে গিয়ে এসে বলতে পারে তখন এসব আবেদন বিবেচনা করা হবে বা নির্দেশ দেওয়া হবে।
অর্থাৎ আগামী ৬ এপ্রিলের মধ্যে হাজারীবাগের ট্যনারি মালিকরা যদি নিজেরাই সরে গিয়ে আদালতে এসে হলফনামা দিয়ে যদি বলে, আমরা হাজারীবাগ থেকে সরে গেছি, তখন তাদের আবেদনের উপর কোনো নির্দেশনা আদালত দিতে পারে।
৬ এপ্রিলের মধ্যে হাজারীবাগ থেকে ট্যনারি সরিয়ে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা ছিল বলেই এই সময়সীমার প্রসঙ্গটি আসে। এ বিষয়ে আগামী ৯ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানান এই আইনজীবী।
এর আগে শুনানি শুরু হলে ফজলে নূর তাপস বলেন, “আমাদের সব কিছু তো এমনি শেষ। আমরা ৬ এপ্রিলের মধ্যে সব ট্যানারি কারখানা ক্লোজড ডাউন করতে যাচ্ছি। আমাদের বকেয়া জরিমানার বিষয়টি বিবেচনা করেন।”
তখন আদালত বলে, আগে ৬ এপ্রিল সব ‘ক্লোজড ডাউন’ করে আসেন তখন বকেয়া জরিমানার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।