ওই ঘটনায় করা সাধারণ ডায়রিসহ (জিডি) বিচারিক নথিপত্র হাই কোর্টের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের হাকিম আদালত থেকে ঢাকার আদালতে পাঠানোর পর অভিযোগটি স্বপ্রণোদিতভাবে আমলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এজন্য তদন্তে নাম আসা সেলিম ওসমান ও স্থানীয় অপু প্রধানের নাম-ঠিকানার পূর্ণ বিবরণ বুধবারের মধ্যে জমা দিতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারকে এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা বেগম।
আদালত গত ১৯ মার্চ এই নির্দেশ দিলেও সোমবারের আগে গণমাধ্যমের কাছে তা প্রকাশিত হয়নি।
এখন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম অভিযোগটি স্বপ্রণোদিতভাবে আমলে নিয়ে মামলাটির জন্য একজন বাদি ঠিক করে দেবেন।
এবিষয়ে ঢাকার বিচারিক আদালতে ফৌজদারি মামলার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইন অনুযায়ী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কোনো কর্মচারী অথবা সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের কোনো কর্মকর্তা নালিশি এ মামলার বাদি হবেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, “সংশ্লিষ্ট কাউকে কোর্টের প্রতিনিধি হিসাবে বাদি গণ্য করার ক্ষমতা আদালতের রয়েছে।”
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত বছরের ১৩ মে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে তারই স্কুলের প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিওতে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বসের নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে।
ওই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হলেও পুলিশ ‘লাঞ্ছনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ জানিয়ে অভিযোগ সত্য নয় বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয়।
কিন্তু পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাই কোর্ট পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি চলতি বছর ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে।
এর ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ জে বি এম হাসানের বেঞ্চ ওই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র অবিলম্বে ঢাকায় পাঠাতে নির্দেশ দেয়।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নালিশি মামলা করার জন্য জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারক জেসমিন আরার কাছে পৌঁছায়।