জঙ্গিদের অর্থ ব্যাংকিং সিস্টেম থেকেই আসে: দুদক চেয়ারম্যান

দেশজুড়ে চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় বিভিন্ন আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাংক ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই জঙ্গিদের হাতে যাচ্ছে বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2017, 08:09 AM
Updated : 26 March 2017, 12:13 PM

রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “পুলিশ বিগত সময়ে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে, সেখানে প্রচুর অর্থ পাওয়া গেছে। এই অর্থ তো ব্যাংকিং সিস্টেম থেকেই আসে। টাকা তো হাওয়া থেকে আসে না।”

ব্যাংকগুলোকে নীতিমালা ও বিধিমালা মেনে পরিচালনা করার জন্য দুদকের পক্ষ বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, নিয়ম-নীতি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেন হলে জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “জঙ্গিবাদের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আসে। আর আসে হয়তো হুন্ডির মাধ্যমে। তবে হুন্ডির মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ আসে বলে মনে হয় না।”

হুন্ডি বন্ধ করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদক যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

“এখন ঋণ বা অর্থ আদান-প্রদানে যথেষ্ট নিয়ম মানা হচ্ছে। আমি মনে করি যে, ব্যাংকিং সিস্টেম যদি আমরা সঠিকভাবে চালাতে পারি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হবে।”

প্রত্যেকের কাছে গিয়ে জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ করা সম্ভব না উল্লেখ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “একটা সিস্টেমে যেতে হবে, আমরা সেই সিস্টেমেই কাজ করছি।”

তবে জঙ্গির বিষয়টা দুদকের কাজের মধ্যে সরাসরি পড়ে না জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা (জঙ্গিবাদ) ঘুরিয়ে আসে। দুর্নীতির সংজ্ঞা করতে গেলে জঙ্গিবাদ একটি উদাহরণ। দুর্নীতিকে টেনে ধরতে পারলে জঙ্গিবাদও টানা সম্ভব হবে। দুর্নীতির লাগাম যদি টানা যায়, ছেলে-মেয়েদের যদি সঠিকভাবে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করাতে পারি, শিশুদের সঠিকভাবে মানুষ করতে পারলে তারা জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত হবে না।”

‘দুর্নীতি হলে শেষ-নিজে বাঁচবো, বাঁচবে দেশ’ স্লোগান নিয়ে রোববার থেকে শুরু হওয়া দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দুদক।

এ বিষয়ে সংস্থাটির প্রধান বলেন, “দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেমন- ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিকসেবী যারা আছেন সবাই মিলে দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে দেশেকে মুক্ত করা। সবাই এক সুঁতোয় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে দুর্নীতির দূর করা সম্ভব।”

শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে প্রতিরোধ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, এএফএম আমিনুল ইসলাম এবং কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও উপস্থিত ছিলেন।

এরপর দুদকের মিডিয়া সেন্টারে ‘দুর্নীতি বিরোধী আলাকচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শনী’ উদ্বোধন করেন ইকবাল মাহমুদ। সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী সর্বসাধারণের জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।