একাত্তরের গণকবর সংরক্ষণে বিশেষ বাজেট দাবি

মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস ও গণহত্যার সাক্ষী হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সব গণকবর সংরক্ষণে ‘বিশেষ বাজেটের’ দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2017, 04:14 PM
Updated : 25 March 2017, 04:14 PM

শনিবার বিকালে জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “গণহত্যা অতীতের বিষয় নয়। গণহত্যা ভবিষ্যতের বিষয়। পঁচিশে মার্চের গণহত্যার জাতীয় স্বীকৃতি মিলেছে।

“এবার আমি দাবি করব, একাত্তরের বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণে সংসদে যেন এক বিশেষ বাজেট প্রণয়ন করা হয়।”

পঁচিশে মার্চের নৃশংসতম গণহত্যার প্রামাণ্য দলিল, দস্তাবেজ আর গল্প সংগ্রহ, সংরক্ষণে তরুণ গবেষকদের আহ্বান জানিয়ে আতিউর বলেন, “আমাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলুক আর না মিলুক, আমরা এই গবেষণায় প্রমাণ করতে চাই, জাতি হিসেবে আমরা আমাদের অতীত ভুলে যাইনি।”

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আর গণহত্যার নানা প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর।

তিনি বলেন, “কুমিল্লার ওয়ার সিমেট্রির মতো দেশের গণকবরগুলোকে একটি ওয়ার সিমেট্রি করা যেতে পারে। আর তা হবে আমাদের স্মৃতির মিনার।”

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমির পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমির জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে একযোগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলোক প্রজ্জ্বলন করা হয়।

সন্ধ্যায় আলোচনা পর্বটি হয় একাডেমির নন্দনমঞ্চে। এতে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. ইব্রাহীম হোসেন খান।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আতিউর রহমান এবং ওয়্যার ক্রাইমস ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফাইন্ডিংস কমিটির সভাপতি ডা. এম এ হাসান।

এই আয়োজনে আরও ছিল স্থাপনা শিল্প প্রদর্শনী, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, মূকাভিনয় ও দেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

প্রতিষ্ঠার ২১ বছর পূর্তি ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী উৎসব চলছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে।

শনিবার উৎসবের চতুর্থ দিনে গণহত্যা দিবস ও কালরাত স্মরণে সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয় জাদুঘর চত্বরে।

এর আগে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করেন কাজী শামস তাথৈ ও আবির সুর। প্রদর্শিত হয় প্রামাণ্যচিত্র ‘কবি মেহেরুন্নেসা’। এটি নির্মাণ করেছেন রিয়াজ মাহমুদ মিঠু। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সঙ্গীতাঙ্গন মনিপুর। সবশেষে রঙ্গপীঠ মঞ্চস্থ করে পথনাটক ‘খেয়াপারের মাঝি’। নাটক পরিবেশন করে মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরাম।

শিশু একাডেমি

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে একাডেমির বইমেলার মুক্তমঞ্চে বিকালে ‘২৫শে মার্চের কথা শোনো’ শিরোনামে কথামালার আয়োজন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস তুলে ধরে শিশুদের সঙ্গে কথোপকথনে মেতে উঠেন কবি নির্মলেন্দু গুণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেবেকা মমিন।