বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন বৈদ্যুতিক হিটার থেকে: ফায়ার সার্ভিস

বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুনের সূত্রপাত একটি ‘ইলেকট্রিক হিটার’ থেকে বলে সন্দেহ করছে ফায়ার সার্ভিস গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2017, 12:15 PM
Updated : 25 March 2017, 05:57 PM

রিজার্ভ চুরির এক বছর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এই ধারণার কথা জানান তিনি। 

অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক সমরেন্দ্র প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইলেকট্রিক হিটারটি প্লাকে লাগিয়ে রেখে যাওয়া হয়েছিল। ইলেকট্রিক হিটারের প্লাক যেখান ঢুকেছে, তার ৭/৮ ইঞ্চি দূর থেকে পুড়ে সুপার হিট হয়ে গেছে; ইলেকট্রিক হিটারটি সেখানেই পড়ে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায় যে, আগুনটি এখান থেকেই লেগেছে।”

“আগুনটার ব্যাপ্তি ছিল এক হাজার স্কয়ার ফুটের মতো জায়গা নিয়ে। আগুন কোথা থেকে লেগেছে সেটা দেয়াল দেখলে বোঝা যায়; সে জায়গাটা সাদা হয়ে আছে, আর বাকি জায়গায় কালি লেগে রয়েছে,”  যোগ করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবনের ১৪ তলার একটি কক্ষে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় এক ঘণ্টার মধ্যে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) ঘর ও আসবাবপত্র পুড়ে যাওয়ার কথা জানা গেলেও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পোড়েনি বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছে এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত তদন্ত কমিটি।

ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান সমরেন্দ্রও বলেন, “এটা একটা ছোট্ট ঘটনা, আগুন বড় ছিল না। জিএম সাহেবের রুমের পিছনের অংশ পোড়েনি, সামনের দিকে পুড়েছে।

“মূলত আগুনটা এত বড় দেখা গেছে, কারণ অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে ছাদটা করা, অ্যালুমিনিয়ামের ছাদটি পুড়ে এত ধোঁয়া বের হয়েছে।এর এক টেবিল পরেই চেয়ারের টাওয়ালও পোড়ে নাই।”

এই অগ্নিনির্বাপক কর্মকর্তা বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের জিএমের কক্ষে যে ‘ইলেকট্রিক হিটারের শর্টসার্কিট থেকে’ আগুন লেগেছে বলে ধারণা করছেন, সেটি পুলিশ নিয়ে গেছে জানান।

“পুলিশ একটা সিপিইউ (কম্পিউটার) নিয়ে গেছে, সিপিইউর সামনের অংশ পুড়েছে, পেছনের অংশ পোড়ে নাই। পুলিশ প্লাকসহ সেই ইলেকট্রিক হিটারও নিয়ে গেছে, যার থেকে আগুন লেগেছে।”

এক বছর আগে আট কোটি ১০ লাখ ডলার রিজার্ভ চুরির অর্থের মধ্যে ফিলিপিন্স থেকে দেড় কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেলেও বাকি টাকা উদ্ধারে আশানুরূপ কিছু না দেখতে পাওয়ার মধ্যে এ আগুনকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ বলেছে বিএনপি।

অগ্নিকাণ্ডটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি কেউ সেখানে লাগিয়েছে, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর কর্মকর্তা সমরেন্দ্র।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট্কমে বলেন, “আমরা আমাদের হাতে সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছি, ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কারো আনাগোনা আছে কি-না, আমরা দেখব।”

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আরও কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলার পরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবেন বলে জানান ফায়ার সার্ভিস গঠিক এ তদন্ত কমিটির প্রধান।