দ্বিগুণ জনবল চায় দুদক

জনবল বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।

তাবারুল হক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2017, 07:24 AM
Updated : 24 March 2017, 07:24 AM

দুদকের নতুন জনবল কাঠামোর পাশাপাশি বার্ষিক বরাদ্দ দ্বিগুণের বেশি দাঁড়ানোর একটি প্রস্তাব সম্প্রতি কমিশন সভায় অনুমোদন পেয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কমিশনের বর্তমান জনবলের বেতন ও ভাতার জন্য বার্ষিক ব্যয় ২২ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত কাঠামোতে এই খাতে ব্যয় বাড়বে আরও ২৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

কমিশন সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বর্তমানে দুদকে কর্মী সংখ্যা এক হাজার ৬৩ জন। প্রস্তাবিত কাঠামোতে জনবল হবে দুই হাজার ২০২ জন।

তিনি জানান, মো. বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে আগের কমিশনের সময়ও জনবল বাড়ানোর একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় ওই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দুদকে ফেরত পাঠায়।

পরে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাবটির বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে তা নতুন করে আবারও মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় নতুন কাঠামো তৈরি করে গত রোববার ‘কমিশন সভায়’ তা চূড়ান্ত করে অনুমোদন দেওয়া হয়।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে জানিয়ে দুদক সচিব বলেন, নতুন জনবল কাঠামো গৃহীত হলে কমিশনের মহাপরিচালক (ডিজি), পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, উপ-সহকারী পরিচালক, কোর্ট পরিদর্শক এবং দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বাড়বে।

এছাড়া নতুন একটি মেডিকেল ইউনিট, আইসিটি, হেল্প ডেস্ক ও ইলেক্ট্রিক্যাল ইউনিট করার প্রস্তাব রয়েছে। দুদকের জনসংযোগ শাখাকেও সম্প্রসারণ করা হবে।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় আছে ২২টি, নতুন প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ৩৫টি করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া মহাপরিচালকের সংখ্যা ছয়জন থেকে বাড়িয়ে আটজন করার কথা বলা হয়েছে।

দুদকে বর্তমানে মহাপরিচালক (তদন্ত) নামে একটি পদ রয়েছে। এর জায়গায় তদন্ত-১ ও তদন্ত-২ নামে দুটি পদ এবং প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি মহাপরিচালকের আরেকটি পদ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে।

পরিচালকের সংখ্যা ১৯ জন থেকে বাড়িয়ে ৩৫ জন, উপ-পরিচালক ৮১ থেকে ১৮৪ জন, নিয়মিত সহকারী পরিচালক ১৩৩ জন থেকে ৩২০ জন এবং প্রথম শ্রেণির পদ ২৬০ থেকে বাড়িয়ে ৫৯৪ জন করার প্রস্তাব করেছে কমিশন।

এছাড়া উপ-সহকারী পরিচালক ১২৪ থেকে ৩০৯ জন, কোর্ট পরিদর্শক ২১ থেকে ৪২ জন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ১ থেকে ২ জন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কর্মী সংখ্যা ১৪৮ জন থেকে বাড়িয়ে ৪১৪ জন করার প্রস্তাব রয়েছে।

অন্যদিকে তৃতীয় শ্রেণির বর্তমান লোকবল ৮১৩ জন থেকে এক হাজার ৪০ জনে এবং চতুর্থ শ্রেণির পদ ৪৩টি থেকে বাড়িয়ে ১৫১টি করতে বলা হয়েছে দুদকের প্রস্তাবে।

কমিশনের ‘অনিস্পন্ন বিষয়াদি ও পরিদর্শন অনুবিভাগ’ এর নাম বদল করে ‘মানিলন্ডারিং বিভাগ’ করার প্রস্তাব সেখানে দেওয়া হয়েছে বলে মোস্তফা কামাল জানান।

এ প্রস্তাব অনুযায়ী, তিন জনের আইটি উইংয়ে একজন পরিচালক ও দুই জন উপ-পরিচালক থাকবেন। তাদের মধ্যে থাকবেন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার প্রকৌশলী।

বর্তমানে প্রশিক্ষণ শাখায় একজন উপ-পরিচালক আছেন, সেখানে সার্বক্ষণিক একজন পরিচালক চাইছে দুদক।

সচিব জানান, প্রস্তাবে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল ইউনিট করার কথা বলা হয়েছে, যেখানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একজন চিকিৎসক দায়িত্বে থাকবেন। তাদের ডেপুটেশনে নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে।

একজন পরিচালক, দুজন উপ-পরিচালক এবং দুজন সহকারী পরিচালক নিয়ে জনসংযোগ শাখা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে বর্তমানে কাজ করছেন একজন উপ-পরিচালক।

২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের অধীনে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন করা হয়।