কালভার্টের খোলা মুখে মৃত্যু: সাতজনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

রাজধানীর পল্টনে কালভার্টের খোলা মুখ দিয়ে নালায় পড়ে প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2017, 01:18 PM
Updated : 19 March 2017, 01:21 PM

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।

বাকি ছয়জন হলেন- ওয়াসার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাইদ শাহরিয়ার হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জসীম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যসহকারী মোহাম্মদ রুস্তম আলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেজবাহ উদ্দিন রাসেল, সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রুবি এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ হোসেন।

দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানার ওসিকে মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

পাশাপাশি ওই ঘটনায় দায়ের করা প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) ‘ভুল তথ্য দেওয়ায়’ পল্টন থানার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

গত ৬ মার্চ রাতে পল্টনের কালভার্ট রোডে ঢাকনা খোলা একটি কালভার্টের মুখ দিয়ে নালায় পড়ে যান সানু মিয়া নামের ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আধা ঘণ্টার চেষ্টায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ৭ মার্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দেয় হাই কোর্ট।

নালায় পড়ে মৃত্যুর ওই ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে বিবাদীদের কেন দায়ী করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কেন ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

মৃত ব্যক্তির পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না- রুলে তাও জানতে চায় আদালত।

স্থানীয় সরকার সচিব, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পল্টন এলাকার ড্রেনেজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও পল্টন থানার ওসিকে রুলে বিবাদী করা হয়।

সেদিন বিচারক বলেন, “মাসাধিককাল ম্যানহোল ঢাকনা ছাড়া খোলা থাকে। এতে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ থাকে না। এভাবে মানুষ মারা যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না।”

ওয়াসার এমডি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) হাই কোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় সেদিন।

সে অনুযায়ী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান এবং ডিসিসির প্রধান নির্বাহী খান মো. বেলাল রোববার আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিলে তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আদালতে ওয়াসার পক্ষে ব্যারিস্টার শফিক আহমদ ও ডিসিসির পক্ষে ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

পরে তাপস কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, এসব আদেশের পাশাপাশি নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।