উন্নয়নে আন্তরিকতার প্রমাণ দিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

এক হাজার ৩৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও দশ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন সুবিধার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন তরান্বিত হয় সেটা তার দল প্রমাণ করেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2017, 09:26 AM
Updated : 1 March 2017, 11:21 AM

গণভবন থেকে দেশের বিভিন্নস্থানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব প্রকল্প উদ্বোধনের সময় তিনি বলেন, “আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন যে তরান্বিত করা যায় সেটা আমরা প্রমাণ করেছি এবং সেটা পেরেছে আওয়ামী লীগ।

“আওয়ামী লীগ পারে একারনেই যে জাতির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, ঐক্যবদ্ধ করেছেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করে আমাদেরকে স্বাধীন দেশ এনে দিয়েছেন।”

সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আরও একটি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও গ্রিড উপকেন্দ্র এবং পার্বত্য থানচি উপজেলায় বিদ্যুৎ সুবিধার উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী ভিপিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলায় প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক খান প্রমুখ।  

যে দশটি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত হলো সেগুলো হচ্ছে- ঢাকার সাভার ও কেরানিগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া, টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলি, ফেনীর দাগনভুঁইয়া, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, মেহেরপুরে মুজিবনগর ও রংপুরের সৈয়দপুর উপজেলা।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন মনে করে এটা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব যে, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবে।

“আর এর বাইরে অবৈধভাবে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল এবং ২১ বছর এদেশের মানুষের ওপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছিল, তাদের কোনো দায়-দায়িত্ববোধ ছিল না।”

“তারা শুধু লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, খুন-খারাবি, হত্যা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা, জাতীয় সম্পদ পুড়িয়ে ধ্বংস করা, এমনকি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া এবং সেখানে কর্মরত প্রকৌশলীকে পর্যন্ত হত্যা করেছে এই বিএনপি জামায়াত জোট।”

যুদ্ধপরাধীদের বিচারের রায় ও ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি জামায়াত জোটের সহিংস হরতাল-অবরোধের সময়ের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “নিশ্চয়ই দেশবাসী ভুলে যায়নি ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ তে কি তাণ্ডব তারা এদেশে করেছে। দেশের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। অর্থসম্পদ বানানো এটাই তাদের ক্ষমতায় থাকার লাভ।

“আর আওয়ামী লীগ আসে দেশের মানুষকে কিভাবে লাভজনক করবে, দেশের মানুষের সার্বিক উন্নতি কিভাবে করবে, মানুষের সার্বিক চাহিদা কিভাবে মেটাবে এই লক্ষ্য নিয়ে।”

সে লক্ষ্য নিয়েই যেসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যার শুভফল দেশের মানুষ পাচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় যেন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ যায় তার ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি।

“দেশের মানুষের আর যেন অন্ধকারে না থাকতে হয়, তারা যেন আলোকিত জীবন-যাপন করতে পারে সেই চিন্তা-ভাবনা নিয়েই কিন্তু আমাদের সকল পদক্ষেপ। ”

মঙ্গলবার বিদ্যুৎ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, নির্মাণ শেষে নতুন আটটি কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ইতোমধ্যে গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৫ মেগাওয়াট। বাকি পাঁচটি বেসরকারি খাতের।

রাষ্ট্রায়ত্ত তিন কেন্দ্রের মধ্যে শাহজিবাজারে ৩৩০ মেগাওয়াট ও আশুগঞ্জে ৪৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র দুটি নতুন। আর খুলনায় ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুত কেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেলে উন্নীত করা হয়েছে।

এছাড়া মানিকগঞ্জে ৫৫ মেগাওয়াট, নবাবগঞ্জে ৫৫ মেগাওয়াট, নারায়ণগঞ্জে ৫৫ মেগাওয়াট, জামালপুরে ৯৫ মেগাওয়াট ও বরিশালে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে বেসরকারি খাতে।