বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে গ্রাউন্ডিং রডের মান নিশ্চিতের নির্দেশ

বৈদ্যুতিক সংযোগে ব্যবহৃত বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণের ‘গ্রাউন্ডিং রড’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর গুণগত মান নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।

গ্রাউন্ডিং রডের গুণগত মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুল দিয়ে তা জানতেও চেয়েছে হাই কোর্ট।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক ও উপ পরিচালককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রাজধানীর মিজান মিয়া নামের এক ইলেকট্রিশিয়ান এই রিটটি দায়ের করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

পরে রাশেদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত বছরের ৫ মে দৈনিক ইত্তেফাক ‘পল্লী বিদ্যুতের সংযোগে নিম্নমানের গ্রাউন্ডিং রড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এছাড়াও একই মাসের ১৪ তারিখে ভয়েস অব আমেরিকা এ বিষযে সংবাদ সম্প্রচার করে। যাতে দুই দিনে বজ্রপাতে ৫৬ জন মৃত্যুর কথা বলা হয়।

তিনি বলেন, “বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে গ্রাউন্ডিং রড বড় ধরণের ভূমিকা রাখে।”

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগে নিম্নমানের গ্রাউন্ডিং (মাটির নিচে ব্যবহৃত) রড ও তার ব্যবহার বেড়েছে। এর ফলে বজ্রপাতে প্রাণহানি ও বিদ্যুত্ বিতরণ ব্যবস্থা নষ্টসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। অকেজো গ্রাউন্ডিং রডের কারণে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্নস্থানে বড় দুর্ঘটনাও ঘটেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রাহকদের অসচেতনতা, পল্লী বিদ্যুত্ সমিতিগুলোর (পবিস) নজরদারিতে দুর্বলতা ও গাফিলতি এবং গ্রাম্য বিদ্যুৎ মিস্ত্রিদের (ইলেক্ট্রিশিয়ান) দুর্নীতির কারণেই গ্রাউন্ডিং রডের যথাযথ মান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়- ‘জানা গেছে, দুই বছর আগে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় রড গ্রাহকদের মাধ্যমেই কেনা বা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। ২০১৪ সালের মার্চের ওই সিদ্ধান্তের পর বোর্ডের অধীনে থাকা পবিসগুলো গ্রাউন্ডিং রড সরবরাহ করছে না। গ্রাহকরা নিজেরাই খোলা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় রড ও তার সংগ্রহ করে। এতে আরইবি বা পবিসের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে অসচেতনতায় ও অর্থ বাঁচাতে গ্রাহকরা প্রায়ই নিম্নমানের রড কিনে থাকে।’