লেখক-গবেষক যাকায়িরাকে স্মরণ

লেখক-গবেষক আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকায়িরার মৃত‌্যুবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মরণসভা, আলোকচিত্র ও তার লেখা বই প্রদর্শনীর মধ‌্য দিয়ে স্মরণ করা হল এই প্রত্নতাত্ত্বিককে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2017, 04:07 PM
Updated : 24 Feb 2017, 04:07 PM

শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন পুরাতন সিনেট কক্ষে তার স্মরণসভা হয়। এ সময় সিনেটের বাইরে প্রদর্শিত হয় যাকারিয়ার সংগৃহীত আলোকচিত্র ও তার লেখা বইগুলো।

স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “তিনি যে বিষয়ে গবেষণা করে গেছেন, তা আমাদের সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে মূল্যায়ন করে। তিনি সময় ও শ্রম দিয়ে এই গ্রন্থগুলো রচনা করছেন। উনি হয়ত আজকে নাই, কিন্তু উনার গ্রন্থনায় উনি আছেন। উনি নেই, ভাবাটা উচিত হবে না।”

প্রত্নতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক, পুঁথিসাহিত্য-বিশারদ ও অনুবাদক সুফি মোসত্মাফিজুর রহমান আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ৯৮ বছর বয়সে গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি মারা যান।

তার এই মৃত‌্যুকে ‘অকাল মৃত‌্যু’ বলছেন আরেফিন সিদ্দিক।

এর ব‌্যাখ‌্যায় তিনি বলেন, “পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ থাকেন, তাদের যত বয়সই হোক তার মৃত্যু অকাল মৃত্যু। কারণ তিনি বহু কিছু লিখছেন, সমাজকে দিয়ে চলছেন। মুত্যৃ তাকে থামিয়ে রাখে।

“যাকারিয়া এক আমলা ছিলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন। আমি জানি, তিনি একজন ভালো শিক্ষকও ছিলেন। তিনি যেখানে গেছেন, সেখানেই শিক্ষা দিয়েছেন; আমরা শিক্ষা গ্রহণ করেছি।”

যাকারিয়ার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানে তিনি আসতেন সবার আগে, এমনকি তরুণদেরও আগে। অনুষ্ঠান শেষে বের হতেন, এটাই তো তার কাছ থেকে শেখার বিষয়।”

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, “তিনি উচ্চ পর্যায়ের পণ্ডিত ও গবেষক ছিলেন। তার লেখা ও সম্পাদনায় প্রাচীন বঙ্গ ও সভ্যতার ইতিহাস উঠে এসেছে। সাহিত্যে তার এই অবদান অনস্বীকার্য।”

জাতীয় জাদুঘরে কিউরেটর নীরু শামসুন নাহার বলেন, “তিনি (যাকারিয়া) নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান, তিনি জ্ঞানের ভাণ্ডার। কালের গহ্বরে যাতে সেই ভাণ্ডারকে হারিয়ে না ফেলি, ভুলে না যাই।”

স্বাগত বক্তব্যে কবি আজহার ফরহাদ বলেন, “তিনি তরুণদের চেয়েও তরুণ ছিলেন। তিনি প্রত্নতত্ত্ব, ধর্ম ও নৃতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতেন। প্রাচীন বঙ্গের ইতিহাস নিয়ে কাজ করেছেন, গবেষণা করেছেন। আমৃত্যু নিয়োজিত ছিলেন প্রাচীন বঙ্গ চর্চা নিয়ে। তার অকাল মৃত্যুতে জাতীয় শূন‌্যতার সৃষ্টি হয়েছে।”

অন্যদের মধ্যে স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমদ, লেখক-গবেষক মাওলানা মুহাম্মুদ নুরুউদ্দিন ফতেহপুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শামীম বানু, ফারসি বিভাগের শিক্ষক আহসানুল হাদী, প্রয়াত এ কে এম যাকারিয়ার ছেলে মারুফ শামসের যাকারিয়া ও মেয়ে ডা. জাকিয়া মাহফুজা হাসান বক্তব্য দেন।