মানবিক-অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার শপথ শিক্ষার্থীদের

বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদী-উদার-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে শপথ নিল রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা হাজারো শিক্ষার্থী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2017, 01:41 PM
Updated : 24 Feb 2017, 01:41 PM

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী নানা অপরাধে দায়ীদের চলমান বিচারপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে তারাও ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যয় জানাল।

শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র খেলার মাঠে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের শিক্ষা কর্মসূচির আয়োজিত ‘মুক্তির উৎসব’- এ এসে তারা এ শপথ নিল। তাদের শপথবাক্য পাঠ করান বীরউত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ।

ক্যাপ্টেন আকরামের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী ও শিশু নির্যাতন ও সহিংসতাকে রুখে দেওয়ার শপথ নেয়।

সব ধর্ম ও জাতিসত্তার মানুষের অধিকার রক্ষা ও সম্প্রীতির স্বদেশ গড়বার প্রত্যয় নিয়ে তারা বলেছে, “পবিত্র ধর্মের অপব্যবহার করে নিরীহ মানুষ হত্যা প্রতিরোধ করব আমরাই।”

আয়োজনের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিদের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরে জাতীয় সংগীত ও দেশের গান পরিবেশন করে ছায়ানট। তারপর নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে স্পন্দন।

এরপর স্বাগত ব্ক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারোয়ার আলী বলেন, “২১ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মকে আমাদের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে যাত্রা শুরু করেছিল এই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আজ এই উৎসবে এসে আমরা সব পশ্চাৎপদতা, ধর্মান্ধতা থেকে দেশকে নিরাপদ রাখব, এই আহ্বান জানাই।

“যারা ধর্মের অপব্যাখ্যা করে পবিত্র ধর্মকে সন্দেহজনক করে তুলছে, আসুন সেই আবর্জনাগুলোকে দূর করি,” আহ্বান জানান তিনি।

তার স্বাগত ব্ক্তব্যের পর মঞ্চে একে একে পারফর্ম করে সানিডেল স্কুল, ক্যালিক্স প্রি ক্যাডেট স্কুল, দক্ষিণখান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, আবদুল্লাহ মেমোরিয়াল হাই স্কুল, ইউসেফ স্কুল, বধ্যভূমির সন্তানদল, জলের গান। মঞ্চে এসে দেশের গান শোনান ফেরদৌস আরা ও বাপ্পা মজুমদার।

শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবালও এসেছিলেন মুক্তির উৎসবে।

নতুন প্রজন্মের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমার অনেক বন্ধু মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল, তোমাদের নতুন এক দেশ উপহার দেবে বলে। আজ তোমরা এক নতুন যুদ্ধ শুরু করেছ, সেই যুদ্ধ বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলার।

“আমার বন্ধুরা যে স্বপ্ন দেখেছিল, তোমরা তাদের সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ উপহার দেবে।”

পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার শোনান মুক্তির কথা, বিজয়ের কথা।

এবার স্বাধীনতা দিবসে নিশাতের নেতৃত্বে একটি অভিযাত্রী দল একাত্তরের শরণার্থী ও বিপন্ন মানুষের স্মরণে হেঁটে যাবে শহীদ মিনার থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত। তাদের সেই অভিযাত্রায় সামিল হওয়ার আহ্বান জানান নিশাত।

কবি তারিক সুজাত পাঠ করেন তার ‘জন্মের আগে আমি মৃত্যুকে করেছি আলিঙ্গন’ কবিতাটি।

উৎসবে আসা শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ঘুরে দেখে ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। শিক্ষকদের জন্য ছিল র‌্যাফেল ড্র।