এই ২৭ দলের মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (রব) চিঠি পাঠালেও সেখানে নির্বাচন কমিশনের সদস্য বাছাইয়ে কারও নাম দেওয়া হয়নি। কেন নাম দেওয়া হয়নি সে বিষয়টি জানিয়েই তারা চিঠি দিয়েছে।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন সার্চ কমিটি গত শনিবার তাদের প্রথম বৈঠক থেকে ৩১টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম চেয়েছিল।
প্রথমে মঙ্গলবার বেলা ১১টার মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ওই নামের তালিকা জমা দিতে বলা হলেও পরে সেই সময় চার ঘণ্টা বাড়ানো হয়।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ওই সময় শেষ হওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও বিধি) আব্দুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের জানান, যে ৩১টি দলকে তারা নাম চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ২৭ দলের সিলগালা করা চিঠি তারা পেয়েছেন।
সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, গণফোরাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সার্চ কমিটিকে কোনো চিঠি দেয়নি।
যেসব দল চিঠি দিয়েছে
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটি পার্টি (এলডিপি), কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যশনালিস্ট ফ্রণ্ট (বিএনএফ), ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), সাম্যবাদী দল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাসদ (আম্বিয়া), বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, গণফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও জাকের পার্টি।
সিপিবিসহ কয়েকটি দল ইসি গঠনে নাম প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আগেই বলেছিল, এভাবে রাজনৈতিক দলগুলো নাম প্রস্তাব করলে ওই ব্যক্তিদের নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়বে।
মঙ্গলবার বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি জানিয়েছে, নাম চেয়ে সার্চ কমিটি যে চিঠি দিয়েছিল, তার জবাবে মঙ্গলবার ওই চিঠি দিয়েছে তারা।
সেখানে বলা হয়েছে, “আমরা বরং মনে করি, কোনো রাজনৈতিক দল যদি কোনো নাম সুপারিশ করে, সে ধরনের নাম ‘ডিসকোয়ালিফাই’ করা উচিত।”
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, তারা সার্চ কমিটিকে চিঠির জবাব দিলেও কোনো নাম জমা দেননি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহযোগিতা দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “আমরা ওই দলগুলোর চিঠি পেয়েছি সিলগালা খামে। সেগুলো আমরা সার্চ কমিটির কাছেই জমা দেব। ভেতরে কী আছে তা আমাদের জানার সুযোগ নেই।”
২৭ দলের মধ্যে চারটির চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পৌঁছায় সোমবার। আর মঙ্গলবার বাকি ২৩ দলের প্রতিনিধিরা অতিরিক্ত সচিব আব্দুল ওয়াদুদের হাতে চিঠি তুলে দেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি বেলা সাড়ে ১২টার পর সচিবালয়ে গিয়ে তাদের নামের প্রস্তাব সম্বলিত চিঠি দিয়ে আসেন। এর পরপরই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নামের চিঠি নিয়ে যান দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
তবে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কাদের নাম প্রস্তাব করেছে- রিজভী বা গোলাপ তা প্রকাশ করেননি।
নতুন ইসিতে একজন নারী সদস্য থাকছে। ফলে সার্চ কমিটিকে নারীদের নামও প্রস্তাবে রাখতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি দলগুলোর কাছে পাওয়া নাম যাচাই বাছাই করে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের সুপারিশ জমা দেবে। তাদের সুপারিশ থেকেই অনধিক পাঁচ সদস্যের ইসি নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।