রোববার ঢাকার পল্টনে মুক্তিভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবির পাশাপাশি উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
শনিবার এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে উঠে আসা সুপারিশের কথা তুলে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের উপদেষ্টা সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, “হকার পুনর্বাসনের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী মহা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ফুটপাতের হকারদের পুনর্বাসনের জন্য স্বল্প মেয়াদে এবং দীর্ঘ মেয়াদে দুই ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
“তবে তার আগে প্রকৃত হকারদের তালিকাভুক্ত করে তাদের পরিচয়পত্র দিতে হবে।”
সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, হকার সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং মসজিদের ইমামদের নিয়ে কমিটি করে এই তালিকা প্রণয়নের সুপারিশ করেন তিনি।
তালিকা করাকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে বর্ণনা করে সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, “এই কাজের সফলতার উপর নির্ভর করবে গোটা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার সফলতা।”
হকার্স ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে ‘নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন’ করে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।”
সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র গত কয়েকদিন ধরে বলে যাচ্ছেন, তিনি জনগণের ফুটপাত জনগণকে ফিরিয়ে দেবেন। কথাটা শুনতে বেশ, কিন্তু এই নগরীর কয়েক লাখ হকার এবং তাদের ষাট থেকে সত্তর লাখ ক্রেতা, তারা কী জনগণের হিসাবের মধ্যে পড়ে না? এই প্রশ্নের উত্তর মেয়র বরাবরই এড়িয়ে যাচ্ছেন।”
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিদিন সকাল ১১টায় মিছিলের পাশাপাশি ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন সেকেন্দার হায়াৎ।
এর মধ্যেল রয়েছে ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি স্থানীয় সাংসদ, রাজনৈতিক দল ও আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিয়, ২৯ জানুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল, ৩০ জানুয়ারি এফবিসিসিআইয়ের সামনে অবস্থান, ২ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ, ৯ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ, ১৪ ফেব্রুয়ারি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ, ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতীকী অনশন এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন গত ১১ জানুয়ারি এক ঘোষণায় জানান, গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতে ১৫ জানুয়ারি থেকে কোনো কর্মদিবসে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আগে হকার বসতে পারবে না।
হকার সমিতির নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সে সময় জানিয়েছিলেন তিনি।
তবে সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে হকার্স ইউনিয়ন আহ্বায়ক আব্দুল হাশেম কবির বলেন, “মেয়র মহোদয় বলেছিলেন, হকার সংগঠনগুলোর সাথে তিনি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাহলে সেই সমস্ত হকার সংগঠন কেন রাজপথে মিছিল সমাবেশ করছে?”
অন্যদের মধ্যে ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুর রহমান বাবুল, আলী আহম্মদ, হযরত আলী, আজিজুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, মঞ্জুর মঈন, শহীদ গোলাপ ও আনোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।