আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি নন্দীপাড়ার ত্রিমোহনী খালের ওপর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে এ অভিযান শুরু হবে বলে রোববার দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন জানিয়েছেন।
খাল উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে রোববার নগর ভবনে ঢাকা জেলা প্রশাসন, ওয়াসা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মেয়র।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালন তাকসিম খান, ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি রিফাত জামিলসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে মেয়র সাংবাদিকদের জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি নন্দীপাড়ার ত্রিমোহনী খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অভিযান শুরু হবে। ৯ ফেব্রুয়ারি গাবতলী থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পর্যন্ত যে বেড়িবাঁধ আছে তার সংলগ্ন সড়কগুলো দখলমুক্ত করার কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, “দখলদার যে দলেরই হোক, যে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাই থাকুক, তা আমাদের বিবেচিত বিষয় নয়।
“জনগণের রাস্তা, ফুটপাত তাদের অধিকারে ফিরিয়ে দেব। এ ব্যাপারে কোনো মহল যড়যন্ত্র করতে চাইলে আমরা তা প্রতিহত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
সম্প্রতি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গুলিস্তান, মতিঝিল ও আশপাশের এলাকার রাস্তা ও ফুটপাত হকারমুক্ত করেছে। তবে এসব স্থানে কর্মদিবসে সন্ধ্যা থেকে এবং ছুটির দিনগুলোতে সারাদিন হকাররা মালামাল নিয়ে বসতে পারবেন বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন।
সভায় ওয়াসার এমডি তাকসিম বলেন, ঢাকা ওয়াসা মোট ২৬টি খাল নিয়ে কাজ করে, অর্থাৎ ওয়াসার হিসাবে এই খালগুলোর অস্তিত্ব আছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ৭টি খাল। এগুলোর মধ্যে খিলগাঁও-বাসাবো খাল, যা প্রায় ১৫শ মিটার দৈর্ঘ্য, সেগুনবাগিচা খাল, মান্ডা খাল, হাজারিবাগ খাল, দোলাইখাল অন্যতম।
এসব খালের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের অংশ হিসাবে খিলগাঁও-বাসাবো খাল দখলমুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তাকসিম বলেন, “সেগুনবাগিচা খালও প্রায় সচল আছে। বর্ষার আগে আমরা ভাসমান বর্জ্য পরিষ্কার করি প্রতিবছর। গত বছর মান্ডখালের কিছু অংশে অবৈধ দখল মুক্ত করা হয়েছিল।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত ১১টি খালের তথ্য জেলা প্রশাসনের কাছে রয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে ধোলাইখাল-১, ধোলাইখাল-২, নন্দীপাড়া খাল, দক্ষিণ নন্দীপাড়া খাল, ডিএমপি বাঁধ বন্যা নিয়ন্ত্রণ খাল, পরীবাগ খাল, রায়ের বাজার খাল, কামরাঙ্গীরচর খাল।
বিগত কয়েকটি জরিপে এসব খাল সরকারি দখল থেকে সংস্থা ও ব্যক্তি মালিকানায় চলে যায় বলে জানান জেলা প্রশাসক।
“সিএস এবং এসএসের সময় এগুলো এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে আরএস এবং অন্য একটি জরিপে এগুলোর কিছু ব্যক্তি মালিকায় গেছে, কিছু সিটি করপোরেশনের অধীনে গেছে, কিছু ওয়াসার অধীনে গেছে।”
“ব্যক্তির নামে যাওয়া খালের জমিতে উচ্ছেদের আগে অধিগ্রহণ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি দরকার, যাতে অভিযান থমকে না যায়,” বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, “আমরা যাত্রা শুরু করতে চাই। এই যাত্রা অনেক বড়। উচ্ছেদের পাশাপাশি খাল দখলমুক্ত রাখতে জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।”