পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম উচ্ছেদে নামছেন সাঈদ খোকন

জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত রাসায়নিকের গুদামগুলো পুরান ঢাকা থেকে সরাতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2017, 01:32 PM
Updated : 19 Jan 2017, 01:53 PM

গুলিস্তান-মতিঝিলের ফুটপাত থেকে হকারদের তোলার পর এই নগর কর্তৃপক্ষের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, আগামী ১ মার্চ থেকে সব গুদাম সরাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান।

মেয়র খোকন বলেন, “পুরান ঢাকার যে সমস্ত কেমিকেল গোডাউন রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ মার্চ থেকে এগুলো স্থানান্তরিত করার কার্যক্রম শুরু হবে।”

র‌্যাব ও পুলিশের সহায়তা নিয়ে ১ মার্চ থেকে সিটি কর্পোরেশনের ম‌্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে অভিযানে নামবে বলে জানান তিনি।

পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের বহু গুদাম রয়েছে, যেখানে মাঝে-মধ‌্যে দুর্ঘটনা ও অগ্নিকাণ্ডে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতিও হচ্ছে।

২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে এক অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের মৃত‌্যু ঘটে, যা রাসায়নিকের গুদামের কারণে ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।

পুরান নিমতলীতে রাসায়নিকের গুদাম থেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির চিত্র (ফাইল ছবি)

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গুলশানে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে দক্ষিণের মেয়র বলেন, সাধারণত বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর সাধারণ মানুষের কাছে একটি কৌতূহল জাগে বিষয়টি কি দুর্ঘটনা না নাশকতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের মনে যে বিষয়টি আসে সেটা হচ্ছে, এটা একটা নাশকতা।

এসব বিষয়ে যে তদন্ত হয়, তার প্রতিবেদনও কখনও জনসম্মুখে না আসায় মানুষের মনে তা অমীমাংসিত ঘটনা হিসেবেই থেকে যায় বলে মনে করেন সাঈদ খোকন।

এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “যদি কোনো অগ্নিকাণ্ড নাশকতার কারণে ঘটে থাকে তাহলে সেই ঘটনাটিকে আইনের আওতায় এনে তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়ার উদ‌্যোগ আমাদের সকলকে নেওয়া উচিত।

“আর যদি ঘটনাটি দুর্ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে সেই দুর্ঘটনার রিপোর্ট অবশ্যই স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জনসম্মুখে প্রকাশ করে জনগণের মধ্যকার সংশয়-উদ্বেগ দূর করার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।”

সাঈদ খোকন (ফাইল ছবি)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই বৈঠকে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকও ছিলেন।

গুলশান ১ নম্বরের ডিএনসিসি মার্কেটের এই অগ্নিকাণ্ড নাশকতা বলে ব‌্যবসায়ীরা সন্দেহ করলেও মেয়র আনিসুল তা উড়িয়ে দিচ্ছেন। ওই অগ্নিকাণ্ড তদন্তে গঠিত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি তিন সপ্তাহেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি।

ফায়ার সার্ভিসের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক বলেন, ঢাকা শহরের বর্তমান জনসংখ্যা অনুযায়ী ঢাকায় ফায়ার সার্ভিসের জনবল থাকার কথা ১০ হাজার, কিন্তু আছে মাত্র ৫০০ জন। অন‌্যদিকে ফায়ার স্টেশন থাকার কথা ৫০টি, কিন্তু আছে মাত্র ১২টি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মুক্ত করে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার দাবি জানান মেয় সাঈদ খোকন।

গোলটেবিল বৈঠকে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, স্বাগত বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান।