শিহাব খুন ‘ভাইয়ের হাতে’, জানতেন বাবা-মা

তিনদিন আগে ঢাকার আদাবরে নিজের ঘর থেকে যে বিশ্ববিদ‌্যালয় ছাত্রের লাশ উদ্ধার হয়েছে, তাকে তার একমাত্র ভাই হত‌্যা করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গোলাম মুজতবা ধ্রুববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2017, 03:03 PM
Updated : 17 Jan 2017, 05:50 PM

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (আইইউবি) বিবিএ’র তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শিহাবুর রহমান শিহাবকে (২৭) হত‌্যায় সিফাতুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিফাত এরইমধ‌্যে ভাই হত‌্যাকাণ্ডে ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশের মোহাম্মদপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন।

পরিবারের সদস‌্যদের কাছে খবর পেয়ে গত শনিবার দুপুরে আদাবরের তিন নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শিহাবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় লাশটি থেকে গন্ধ বেরোচ্ছিল।

তখন শিহাবের ভাগ্নে (মামাতো বোনের ছেলে) আবু বক্কর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই ভাই ও এক বোনের মধ‌্যে সবার বড় শিহাবকে বাসায় রেখে বাবা-মাসহ পরিবারের অন‌্যরা বুধবার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে যান। শুক্রবার বাসায় ফিরে তালাবন্ধ শিহাবের কক্ষ থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পরদিন পুলিশে খবর দেন তারা।

তবে পুলিশ কর্মকর্তা ওয়াহিদুল বলছেন, “গত মঙ্গলবার ভোররাতে শিহাবকে গলাকেটে হত্যা করে তার ছোট ভাই সিফাত। তাদের বাবা-মা বিষয়টি জানতেন। পরদিন বুধবার বিকালে পরিবারের সদস্যরা মাদারীপুরে যান। শুক্রবার রাতে তারা বাসায় ফিরে আসেন।”

সিফাত পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

শিহাবুর রহমান শিহাব

জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ‌্যের বরাত দিয়ে ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, “শিহাব মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। সে নিয়মিত ইয়াবা, মদ সেবন করত। বয়স্ক বাবা-মায়ের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করত। বাসায় মেয়ে নিয়ে এসে তাদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করত। পরিবারটি তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিল।”

শিহাবের বাবা-মায়ের ‘গায়ে হাত তোলা’ মেনে নিতে পারেননি সিফাত।

“বাধ্য হয়েই সে নিজে বড় ভাইকে জবাই করে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকার করেছে,” বলেন তিনি।

বর্তমানে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি সিফাতকে এই হত‌্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামি করা হচ্ছে।

এর কারণ ব‌্যাখ‌্যায় অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ওয়াহিদুল বলেন, “তাদের বাবা-মা বয়োবৃদ্ধ। ওদের ছোট বোনটাও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই শিহাবের বাবার করা হত্যা মামলায় সিফাতই আসামি।”

শিহাবের লাশ উদ্ধারের পর তার বাবা সিরাজুল ইসলাম শনিবার আদাবর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।