আনিকার মা নাদিরা বেগম নওগাঁর মহাদেবপুর থেকে এসে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় জামাতার বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।
পুলিশের হাতে আটক সেলুন দোকানের কর্মী শামীম স্ত্রী আনিকাকে গালাগাল করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে সেই কারণে আনিকার এই কাজ মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
গোপালগঞ্জের শামীমের সঙ্গে ঘরে বাঁধা নওগাঁর আনিকা মঙ্গলবার তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে ঘরে দুই শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর নিজে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা বটি এবং আনিকার লেখা ‘আত্মহত্যার চিরকূট’ পাওয়ার কথাও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঘটনার সময় শামীম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় ছিলেন। ফেরার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নাদিরা বেগম এসে বুধবার জামাতার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনে মামলা করেন বলে দারুস সালাম থানার পরিদর্শক ফারুকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
এরপর শামীমকে এই মামলায় গ্রেপ্তদার দেখিয়ে ঢাকার আদালতে তুলে দুই দিনের রিমান্ড চান দারুস সালাম থানার এসআই নওশের আলী।
তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখেছেন বলে ওই আদালতে পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মিজারুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
পুলিশ কর্মকর্তা ফারুকুল বলেছিলেন, ‘দাম্পত্য কলহের জের ধরেই’ আনিকা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে শামীমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা ধারণা পেয়েছেন।
“গতকাল সকালে নাশতার সময় বাসি ভাত দেওয়ায় শামীম রেগে গিয়ে আনিকাকে গালাগাল করেন। এরপর না খেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শামীম। পরে দুপুরে ওই ঘটনা ঘটে।”
ছোট দিয়াবাড়ি পানির পাম্পসংলগ্ন ওই বাসায় পুলিশ গিয়ে আনিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছিল। এই দম্পতির পাঁচ বছরের মেয়ে শামীমা এবং তিন বছরের ছেলে আবদুল্লাহর লাশ পড়ে ছিল গলাকাটা অবস্থায়।
গ্রেপ্তার শামীম আদালত প্রাঙ্গণে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় তার স্ত্রী আনিকার কাজ নিয়ে যুগপৎ হতাশা ও বিরক্তির কথা জানান।
শামীম বলেন, “সকালে ভাত খেতে গিয়ে নষ্ট তরকারি দেখে মেজাজ খারাপ হয়েছিল। তখন স্ত্রীকে …সহ আরও কিছু অশালীন ভাষায় গালি দিয়েছি। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়ায় আত্মহত্যার বিষয়টি মানতে পারছি না।
“গালি দিয়ে বলেছি- তুই থাক আমি যাই। আর তো কিছু বলি নাই, তার জন্য মরবে কেন? এমন গালি তো সবাই দেয়। ঝগড়া-ঝাটি সবাই করে।”
দুই সন্তানকে হারানোয় নিজের কষ্টের কথাও জানান তিনি।
“তাই বলে বাচ্চা দুইটারে মারবো কেন?”
আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগের বিষয়ে শামীম বলেন, “আমার কারণে মরব কেন? তার জন্য আমাকে ধরে আনল কেন? মামলা দিল কেন?”