বাংলাদেশ-ভারতের জনগণের আন্তঃসম্পর্ককে গুরুত্ব দিতে হবে: মনি শঙ্কর

বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো নির্ধারণের ক্ষেত্রে দেশ দুটির সাধারণ মানুষের ঐতিহাসিক সম্পর্ক ও যোগাযোগকে বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ মনি শঙ্কর আয়ার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2016, 05:16 PM
Updated : 7 Dec 2016, 05:16 PM

বুধবার ঢাকায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে এক ‘পাবলিক লেকচার’ অনুষ্ঠানে বিষয়ের ওপর আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ খেতাব পাওয়া এই কূটনীতিক।

“ভারত বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ঐতিহাসিককাল থেকে গভীর যোগাযোগ রয়েছে। তারা সীমান্তের দুইপাশে সমতলের বাসিন্দা। একে অন্যকে চেনে জানে। তাই বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কে বিবেচনায় রাখা উচিত।”

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’  ও ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’র যৌথ আয়োজনে হয় এই পাবলিক লেকচার।

কয়েকটি বিতর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আসামে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম ছাড়াও হিন্দু, ভারতের অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দাও রয়েছে। সীমান্ত পদ্ধতি চালু হওয়ার আগে মানুষ এভাবেই স্থান বদল করেছে। একইভাবে ভারতের ত্রিপুরা, মনিপুর রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের যোগাযোগ রয়েছে। অথচ কেউ কেউ আসামকে হিন্দুদের প্রাকৃতিক বাসভূমি বলে দাবি করতে চান।”

ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে তিনি বলেন, “ভারতের জনগণ মনে করে, ফারাক্কা বাঁধে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আবার বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, এই বাঁধের কারণে বাংলাদেশের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, আলোচনার মধ্যে আমাদেরকে এই বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছা দরকার।”

জাতীয় উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন ভারতের সাবেক এই পঞ্চায়েত মন্ত্রী।

“ভারত-বাংলাদেশ দু দেশেরই আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন দরকার। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং এই ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার মাধ্যমে আমরা এই উন্নয়ন সাধন করতে পারি।”

মনি শঙ্কর আয়ার বলেন, নারীরা সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী। তাদের পেছনে রেখে কোনো উন্নয়ন সফল হবে না। ভারতে কোটা পদ্ধতির কারণে স্থানীয় সরকারে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। যেমন- ভারতের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় প্রায় এক লাখ নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। কর্নাটকে ৩০টি জেলা পরিষদের মধ্যে ১৯টিতেই চেয়ারপার্সন হিসেবে নারীরা আসীন রয়েছেন।

সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মতিন পাটেয়ারী, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জেরিনা নাহার কবির উপস্থিত ছিলেন।